সুব্রত বিশ্বাস: রাজনীতিতে পচন একবার ধরে গেলে তা বাড়তে বাধ্য। একমাত্র অপারেশন করে, অর্থাৎ পচনধরা অংশটা পুরোপুরি বাদ দিয়ে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। এদেশের রাজনীতিতেও প্রবল পচন ধরেছে। ক্রমে-ক্রমে পার্টিগুলোর মধ্যে ক্ষমতা দখলের পাগলামি এবং লোভ সীমাহীন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। আজ রাজনীতিতে হাইকমান্ড নির্লজ্জ আচার-আচরণ কি অনেক বেশি বেড়ে যায়নি? একইভাবে, রাজনীতিতে মানসিকতা এবং কর্মধারার চেয়ে রাজনীতিতে আচার- আচরণ এবং কর্মধারা কি অনেকটা নিম্নমানের এবং পঙ্কিলতা বেড়ে যায়নি? ‘বর্তমান’- রাজনীতি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডকে জড়িয়ে ফেলছে, চলতে হবে সমান্তরালে। সেই পথ বেয়েই আজ একক সংখ্যাগরিষ্ঠ’ প্রধানমন্ত্রী। ... দলের মধ্যে ‘অক্সিজেন স্যাচুরেশন’ কি সত্যিই কমে গিয়েছে? একের পর এক সবটাই আসলে ক্ষমতার আবর্ত। রাজনীতি হোক বা কর্পোরেট সংস্থা... ক্ষমতা এবং উপার্জন শেষ কথা। না পোষালে বেরিয়ে যাওয়াটাই দস্তুর। আর সেখানে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে দল ভাঙানোর কেরামতি। এই প্রবণতা, এই রাজনীতিই নিম্নমানের..হবে পঙ্কিল হবে।
বাজার চলতি একটা কথা আছে, ক্ষমতা এবং উপার্জন কেরামতি। সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দেশবাসী আশায় বুক বেঁধেছিলো, সত্যিই কি তেমন কোনো ছবি দেখা গিয়েছে,...গিয়েছে? প্রতিশ্রুতির সুতোয় কিন্তু আজও ঘুড়ি উড়িয়ে চলেছে। এই এলো আচ্ছে দিন... কল্পনার ডন-বৈঠক নিন। নিরন্তর। সেই দিবাস্বপ্নের এক্সারসাইজ শুরু হয়ে গিয়েছে দলে আসাতেই কি উচ্চাকাক্সক্ষার এই উড়ান? রাজনীত মুদ্রার আবার উল্টোপিঠও আছে। যেমনটা চাইবে, ঠিক তেমনটা হবে না। উপরতলা থেকে যা নির্দেশ আসবে, সেটাই করতে হবে।’ সেটাই নিয়তি। মানে, ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। চাকরি বদল হোক বা দল, এ নৌকা থেকে ওই নৌকায় লাফ দেওয়ার নেপথ্যে কিছু চাওয়া-পাওয়ার আশ্বাস লুকিয়ে থাকে। রকের ভাষায় বলতে গেলে ‘টোপ’।
প্রতিষ্ঠানবিরোধী ঝড়ের আশায় ছোট-বড় অনেক মাছই সেই ‘চার’ গিলতে শুরু করে। এই শ্রেণি অবশ্য সব শাসক দলেই থাকে। প্রচুর ক্ষমতা, পদ, সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পরও যাদের মন ভরে না। যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানের থেকে বড় বলে মনে করেন। এবং ভাবেন, যে দলে যাবো, সেখানেই বাজিমাত। কিন্তু আমজনতার কাছে সেটা যে বড্ড বেমানান লাগে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে নেতা মহাশয়রা তা বোঝে না’। দলের আদর্শ, কর্মপদ্ধতি পছন্দ হতে পারে, না-ও হতে পারে। প্রাপ্তি এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দর কষাকষি হতে পারে। ভালো প্লেয়ার কোন দল না চায়। আগামী দিনে কোনো নেতা বাংলার প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী হবেন অর্থাৎ, সরকারের সেকেন্ড ইন কমান্ড হবেন, বাংলা দখল করছেনই। কীভাবে নিশ্চিত হবেন? বিলক্ষণ দুর্নীতি-স্বজনপোষণের নামে বিরোধী প্রচার যেমন চলার চলছে। পাশাপাশি নিঃশব্দে একটা শ্রেণির মানুষের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাচ্ছে বিরোধিতা, প্রচার চলছে পরিবর্তনের.. আবার পরিবর্তন কেউ কেউ বদল নয়, বদলা চাই’।