আরিফ জেবতিক: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ১ ঘণ্টায় যাওয়ার জন্য বুলেট ট্রেন আনতে হবে কেন, আমার নিরেট মাথায় কুলায়নি। প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করে এইটা চালু করার স্বপ্ন দেখা হচ্ছে। যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অনলাইনে টিকিট কিনলে সেটাও তাদের স্টেশন থেকে আবার প্রিন্ট করিয়ে নিতে বলে, সেই প্রযুক্তিঅন্ধ লোকজন দিয়ে বুলেট ট্রেন চালানোর চেষ্টা বড্ড হাস্যকর লাগছে।
ঢাকা চট্টগ্রামের মাঝে দিনে ৯টা ফ্লাইট চলে, যাদের তাড়াহুড়ো দরকার তাঁরা প্লেনে উড়ে যায়। ফোর লেন হাইওয়ে আছে, অসংখ্য বাস চলে। একটা ননস্টপ ট্রেন চলতো (এখন চলে কিনা জানি না, আমি অনেক বছর আগে গিয়েছি) সেই ট্রেনে ৪ ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম করা যায়। আমার ধারণা লাইনের শক্তি বাড়ালে, ট্রেনের ইঞ্জিনের শক্তি বাড়ালে ওই সাধারণ ট্রেনেই ৩ ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম করা সম্ভব হবে। এরপরেও ২ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে ট্রেনে করে ১ ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম করার লোক কতোজন হবে সেই জরিপটা কি ঠিকভাবে করা হয়েছে? আমার মনে হয় না।
আমাদের দরকার ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোর সাথে ডেডিকেটেড রেললাইন। ময়মনসিংহ, টাঙাইল, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সাথে আলাদা রেললাইন করা যেতে পারে, যাতে অন্যান্য ট্রেনের সাথে ক্রসিং কম হয়। দ্রুতগতির আধুনিক ইঞ্জিন, ভালো রেললাইন করে দিলে থেকে ২ ঘণ্টায় এসব জেলার লোকজন ঢাকায় আসতে আর ফিরতে পারবেন। তাহলে এই জেলাগুলোতে ইন্ডাস্ট্রি যাবে, এসব জেলায় থেকেও লোকজন ঢাকায় কাজকর্ম করতে পারবে। ঢাকাকে বাসযোগ্য রাখতে এই পেরিফেরি ডিস্ট্রিক্টগুলোর ক্যাপাসিটি বাড়ানো দরকার। বুলেট ট্রেনের চাইতে এসব জনবান্ধব উদ্যোগই মানুষের বেশি কাজে লাগবে। তবে বড় প্রজেক্টে বালিশ আর বটি সরবরাহ করাটাই যদি মূল উদ্দেশ্য হয়, তাহলে বলার কিছু নেই। ফেসবুক থেকে