মোহাম্মাদ শরীফ : জোট সরকারের আমলে প্রগতিশীলরা কতো কিছু করতে পারতো। মোল্লারা যে করে দেখাচ্ছে। বসে থাকে লীগ করে দেবে। উল্টো লীগের গোষ্ঠি উদ্ধারে ব্যস্ত থাকে আমৃত্যু। বিএনপি-জামায়াত কী ব্যানারে আছে কিংবা সব সময় কী হেফাজতের ব্যানারে সব করা হয়? মাথা হলো জামায়াত। লোকবল বাকিদের। এই তরিকা প্রগতিশীলরা মেনেছে কখনো?
সবকিছুর দেনা লীগকে চুকাতে হয় নিজ দলের ত্যাগীদের বাদ দিয়ে। এরশাদ-ইনু-মেনন যুদ্ধোপরাধীদের বিচারের পক্ষপাত অববলম্বন করায় পুরস্কৃত হয়েছেন। লীগের বলে বলীয়ান হয়ে সেক্টর ফোরাম নেমেছিলেন। বন্ধুকে বলেছিলা মুদেখিস, দেনা চুকাতে হবে একটা মন্ত্রীত্ব দিয়ে। হয়েছিলোও তাই। ‘জিয়ো পাকিস্তান’ দিয়ে তিনি লীগকে উল্টো তিরস্কার করেছিলেন।
উপজেলা নির্বাচনের সময় এই ফোরামওয়ালাদের বলেছিলাম ইভেন্টটা ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে। ততোদিনে মন্ত্রিত্ব পেয়ে ব্যানার গুটিয়ে ইউটার্ণ। ওই নির্বাচন এখতেয়ার বহির্ভূতভাবে শুধু জাতীয় নির্বাচনই করার কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কমিশন ঘোষণা দিয়েছিলেন, যা লীগ সরকারের আমলে এসে ঠেকে। নতুন সরকার। তখনও গুছিয়ে উঠতে পারেনি। নির্বাচিত সরকারের দৈনন্দিন কাজ আর তত্ত্বাবধায় সরকারের দৈনন্দিন কাজ এক নয়। সেই অবস্থায় শেখ হাসিনা ওই নির্বাচন স্থগিত করলেও সমালোচনা-তোপের মুখে পড়তেন।
জাতীয় নির্বাচনে যেভাবে যুদ্ধোপরাধীদের বিচারের বিষয়টি এসেছিলো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকারে থাকায় লীগ আর করতে পারছিলেন না, না আসায় এই বিচার বিরোধীরা অনেকে জায়গায় জয়লাভ করে। তাতে পরবর্তী সময়ে এই ইস্যু যখন কোর্ট থেকে টেনে রাজপথে আনা হলো স্থানীয় লীগাররা বেকায়দায় পড়ে।
উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচনতো নয়ই, উপজেলা নির্বাচনের সময়ও শাহবাগের বিপ্লবীদের পয়দা হয়নি। বিচার কার্যকে রাজপথে টেনে না আনলে বিচার বিরোধীরা একহাট্টা হয়ে কথায় কথায় মাঠ দখলে নেমে পড়তো না। কওমি স্বীকৃতি আর কওমি জননী উপাধি কিংবা কদমবুসি দিয়ে চিরায়িত কায়দায় লীগের ঘাড়ে দোষ দিয়ে দায় এড়ানো কথিত প্রগতিশীলদের পুরানো কায়দা। শাহবাগ পূর্ববর্তী রাজনীতি আর পরবর্তী রাজনীতির তুলনামূলক বিচার না করলে সমস্যার মূল উদঘাটিত হবে না, সমাধান তো দূরের বিষয়।