কালাম আজাদ ও মিজান তানজিল : বহুদিন পর এবার পাবনা জেলার বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলনের পাশাপাশি বাজারে ধানের দামও ভালো হওয়ায় এখানকার কৃষকদের মুখে শুধুই হাসি।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিস বলছে এবারে চলনবিলে ৭ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এখন চলছে আগাম জাতের এধান কাটা ও মাড়াইয়ের মহাউৎসব। স্বল্প মেয়াদে ও স্বল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা আমন ধান চাষে একটু বেশি আগ্রহী হন। চলনবিল অঞ্চলে বিনা-১৭, দিঘা, আজলদিঘি, সরসরি, বাঁশিরাজ, বরণ, বিনা-৭, বিনা-৭১, ৬২, ৭২ ও ৭৪ ও স্বর্ণা জাতের ধান চাষ করা হয়। বিঘা প্রতি আমন ধান আবাদে চারা, জমিচাষ ও সারসহ প্রায় সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে হওয়ায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ মন ধান উৎপাদিত হয়েছে। বাজারে প্রতিমন ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১১’শ টাকা। এছাড়া একবিঘা জমির বিচালি/পোয়াল যা গো খাদ্য হিসেবে বিক্রি হয় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা।
চলনবিল অঞ্চলের হান্ডিয়াল, খানমরিচ, অষ্টমণিষা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান, আয়েজ প্রামানিক, আজিজল মল্লিক জানান, গত কয়েক বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমন ধান আবাদে তারা যে ক্ষতি দিয়েছিলেন তা এবার পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছেন। খরচের টাকাটা ধানের খড় বিক্রি করেই উঠে যায়। আর ধান থাকছে লাভের অংশে।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএ মাসুম বিল্লাহ জানান, চলনবিল অঞ্চলে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে। বাজারে দামও ভালো হওয়ায় কৃষক বেশ লাভবান হবেন। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সব সময়ই তাদের পাশে থাকছেন এবং চাষের ও সার বিষ প্রয়োগে পরামর্শ দিয়েছেন। কৃষকদের মুখে হাসি দেখে তাদেরও ভালো লাগছে।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের জানান, অনেকদিন পর এবার আমন ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকেরা। ফলন, দাম বেশি হওয়ায় কৃষকেরা খুশি। এছাড়াও তারা ধান কাটার পর এই জমিতেই সময়মত আরেকটি রবিশস্য আবাদ করার সুযোগ পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে চলনবিল অঞ্চলের আমন চাষীদের এবার শুধুই লাভ। এজন্য তাদের চোখে মুখেও হাসি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্পাদনা : রাশিদ
আপনার মতামত লিখুন :