শিরোনাম
◈ উগ্রপন্থা, সীমান্ত অচলাবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—বাংলাদেশসহ পাঁচ প্রতিবেশীকে ‘হুমকি’ মনে করছে ভারত ◈ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ ◈ আরব আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান  ◈ অবশেষে কমল সোনার দাম ◈ মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে চার সংগঠনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র! ◈ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের চিঠি ◈ ডাকসুতে ভোট কারচুপির অভিযোগে সিসিটিভি যাচাই, উঠে এলো যে তথ্য ◈ সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর ◈ আমি যে কাজ করেছি তা দেশের ইতিহাসে কোনোদিন হয়নি : আসিফ নজরুল ◈ চট্টগ্রামে মার্কিন বিমান ও সেনা উপস্থিতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা, আসলে কী ঘটছে

প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ০৭:০০ সকাল
আপডেট : ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১]আলুর বাজারে কি হচ্ছে?

নিউজ ডেস্ক : [২]দেশের বাজারে আলুর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে দুই দফায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে পণ্যটির দর নির্ধারণ করে দেয় সরকার। প্রথমে খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি ৩০ টাকা নির্ধারণ করায় এতে ব্যবসায়ীদের আপত্তি থাকায় দ্বিতীয় দফায় আরো ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। একইসঙ্গে কিছুদিনের মধ্যে ভোক্তা পর্যায়ে আলুর দাম ৩০ টাকার নিচে নেমে আসবে বলে প্রতিশ্রুতিও দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এমনকি নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি না করলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছিলেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত আলুর বাজারে অরাজকতা চলছেই। পাইকারি পর্যায়ে ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও ব্যবসায়ীরা কখনই এই দরে আলু বিক্রি করেনি। খুচরা বাজারে দাম কিছুটা কমলেও নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি হয়নি। এ অবস্থায় আরো বাড়ানো হচ্ছে আলুর দাম।

পাইকারি বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা। তবে খুচরা বাজারে এখন পর্যন্ত ৪৬ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ক্ষোভ বাড়ছে ভোক্তা সাধারণের।

সরজমিনে রাজধানীর পাইকারি আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা মূল্য তালিকায় ৩০ টাকা লিখে রাখলেও বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৪২ টাকা দরে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন কাওরান বাজারের একজন বড় আলু ব্যবসায়ী, বিক্রমপুর ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. সবুজ। তিনি ৪০ বছর ধরে আলুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, দেশে আলুর সংকট রয়েছে। তাই দাম বেড়েছে। এখন সংকট সৃষ্টির পেছনের কারণটা আপনারা খুঁজে বের করুন। তবে এটাই সত্য যে কোল্ড স্টোরেও আলু নেই। দেশের বিভিন্ন মোকামের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে কোথাও পর্যাপ্ত আলু নেই। তাই আমি আপাতত কেনাবেচা কমিয়ে দিয়েছি। কারণ সামনে আলুর দাম আরো বেড়ে যাবে। দেশের আলু উঠতে এখনো এক দেড় মাস দেরি আছে। এর আগে আরেক দফা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, সরকার শুধু দর নির্ধারণ করে দিলেই হবে না। বাস্তবতাও দেখতে হবে। আমরা দেখছি আলুর সংকট আছে। আর সরকার বলছে আলুর সংকট নেই। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি; সরকার পাইকারি দর ৩০ নির্ধারণ করে দিলেও এই দামে কেউ আলু বিক্রি করেনি। এই যে মূল্য তালিকা দেখছেন এটা শুধু দেখানোর জন্য রাখা হয়েছে। যাতে অভিযানে এসে জরিমানা করতে না পারে। তিনি আরো বলেন, আমাদের একটা হিসাব আছে। সেটা হিসাব করে আমাদের ব্যবসা করতে হয়। লস দিয়ে তো কেউ ব্যবসা করবে না। এই আলু ঢাকায় আনতে বিভিন্ন রকম খরচ আছে। হিসাব করে যাতে এখান থেকে কিছু আয় করতে পারি সেভাবেই ব্যবসা করতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু দাম নির্ধারণ করে দিলেই হবে না। আলুর সরবারহ বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

রাজশাহীর আলু ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, সরকার যখন আলুর দর নির্ধারণ করে দেয় তখন আড়তদাররা আমাদের আলু দিতে নিষেধ করেন। তারা বলেন, যদি সরকারি দরে পাই তাহলে যেনো আলু পাঠাই। এই দরে আলু না পাওয়ায় আমরা কিছুদিন ব্যবসা বন্ধ রেখেছিলাম। দুই একদিন পর ৩৫-৩৬ টাকায় বিক্রি শুরু হলে কেনা শুরু করি। এখন আমাদের এখানে পাইকারি ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত ২০শে অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে ভোক্তা পর্যায়ে আলুর দাম ৩৫ নির্ধারণ করে সরকার। হিমাগারে প্রতি কেজি আলু ২৭ টাকা, পাইকারিতে ৩০ এবং খুচরায় ৩৫ টাকায় বিক্রির নির্দেশ দেয়া হয়। যদিও এই দর কোথাও কার্যকর হয়নি। ব্যাপকভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় আলুর দর নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। সে সময় খুচরায় মান ভেদে প্রতিকেজি আলু ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়, যা স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। দাম নিয়ন্ত্রণে ঢিলেঢালা অভিযানও চালানো হয়। তবে বাজারে অভিযান চালানো হলেও কার্যত সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না।

অন্যদিকে নির্ধারিত মূল্য তালিকা প্রদর্শন করে অতিরিক্ত দামে আলু বিক্রি ভোক্তাদের সঙ্গে চরম প্রতারণার শামিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ক্যাব)-র সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করতে ভোক্তা অধিকারসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোকে অভিযান চালাতে হবে। বাজার মনিটরিং ছাড়া তা কার্যকর করা সম্ভব না। কোথাও কোথাও অভিযান চালানো হয় সেটা যথার্থ নয়। তাদের আরো কঠোর হতে হবে। তিনি বলেন, নির্ধারিত মূল্য তালিকা প্রদর্শন করে অতিরিক্ত মূল্য নেয়া নিঃসন্দেহে অসৎ কাজ। ভোক্তারা এতে প্রতারিত হচ্ছেন। এখন কেউ যদি বিষয়টা নিয়ে অভিযোগ দেয় তাহলে সরকারের সংস্থাগুলোর দায়িত্ব এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়