তপু সরকার: [২] শেরপুরের শ্রীবরদীর নির্যাতিত গৃহকর্মী শিশু সাদিয়ার (১০) মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। সাদিয়া পারভীন (১০) উপজেলার মুন্সীপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
[৩] পুলিশ ও গৃহকর্মীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকার ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিল, স্ত্রী সন্তান নিয়ে শহরের বিথি টাওয়ারের ৬ তলায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
[৪] দীর্ঘদিন তার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে পৌরশহরের মুন্সীপাড়া এলাকার হতদরিদ্র সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া পারভিন। কাজে যোগদানের পর থেকে ওই গৃহকর্মীকে বিভিন্ন অজুহাতে শারীরিক নির্যাতন করতো শাকিলের স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুর। বিষয়টি জেনেও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন বেড়ে যায় তার নির্যাতনের মাত্রা।
[৫] নির্যাতনের ঘটনায় সাদিয়ার অবস্থার অবনতি হলে তার পরিবার গত ২৬ সেপ্টেম্বর শ্রীবরদী থানা পুলিশকে অবগত করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ওই দিন রাত দেড়টার দিকে শিশু সাদিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সাদিয়ার অবস্থা আশঙ্কা জনক দেখে শেরপুর সদর হাসপাতাল ও সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
[৫] প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২৩ অক্টোবর বিকাল ৫টার দিকে সাদিয়ার মৃত্যু হয়। গৃৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বরাই পুলিশ ওই দিন রাতেই উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের স্ত্রী নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুরকে (৩৫) আটক করে।
[৬] ওই ঘটনায় নির্যাতিত শিশু সাদিয়া পারভীনের পিতা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় রুমানা জামান ঝুমুর জেল হাজতে রয়েছে।
[৭] মৃত সাদিয়া পারভীনের পিতা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে সাদিয়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে। আমার মেয়ের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িতদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করি।
[৮] শ্রীবরদী থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, মেয়েটিকে আমানষিক নির্যাতন করা হয়েছে। শুক্রবার শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তিনি বলেন নির্যাতনের ঘটনায় শিশুর বাবা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করে। সেই মামলায় গৃহকত্রী ঝুমুর বর্তমানে জেলা কারাগারে আছে। সম্পাদনা: সাদেক আলী