মাহবুব মোর্শেদ: আজ থেকে দশ-বারো বছর আগে আমার বয়স ছিলো অনেক কম। বোধবুদ্ধি ছিলো অপরিপক্ক। তখন আমি ঢাকার কোনো একটা লিটারারি ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষ করে সাহিত্যিকদের দেউলিয়াপনা দেখে বড়লোকের সাহিত্য নিয়ে রাগী কিছু লেখা লিখেছিলাম। স্বাভাবিক কারণে এদেশের বড়লোক, এমনকি ছোটলোক অনেক সাহিত্যিকের বিরাগভাজন হয়েছিলাম। আমি লিখেছিলাম, কোনো সাহিত্যিকের বড় পদ, কোটি টাকা ও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিকে যখন তার সাহিত্যের মানদণ্ড বিচার করেন, সহসাহিত্যিকেরা তার প্রশংসা করতে থাকেন, তখন একটা বিরাট দুর্নীতির ঘটনা ঘটে যায়। বরং বড়লোক, ছোটলোক নির্বিশেষে সাহিত্যের মানই লেখকদের বিবেচ্য হওয়া দরকার। অন্তত দু’একজন লেখকের উচিত ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও বিত্তের বাইরে অন্য সাহিত্যিক মানদণ্ডগুলোকে বিবেচনায় নেওয়া।
এসব কথা কেউ কানে তোলে না। পরে আমি ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, আমাদের দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজে যেমন চলছে তেমনই চলবে। যতোদিন লেখকদের নানাবিধ চাকরি, প্রমোশন, বৃত্তি ও বিদেশ ভ্রমণ, স্পন্সর ও বিজ্ঞাপন, অনুদান ও পুরস্কার, অনুগ্রহ, যৌনতা-সহ অপরাপর বস্তু দরকার হবে ততোদিন এ সমস্যার সমাধান হবে না। কেননা লেখকরা অতি অল্পে নিজের সাহিত্যিক অবস্থান বিক্রি করে এগুলো অর্জন করতে দ্বিধা করেন না। ফলে উচ্চপদস্থ, প্রতিষ্ঠিত, তৎপর ও বড়লোকদের এদেশে সাহিত্যিক প্রতিষ্ঠা পেতে তেমন কষ্ট করতে হয় না। এমনকি এদেশে এমন সাহিত্যিকও আমি দেখি না যিনি এই প্রলোভনগুলোকে অস্বীকার করে মৃদু সমালোচনা করতে পারেন। আত্মপ্রবঞ্চনা ও প্রলোভনের এ দেশে লজ্জার কোনো অন্ত নেই। ছোটবেলায় আমি এগুলো নিয়ে কথা বলতে পারতাম। এখন আর পারি না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :