মাসুম রেজা: মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম যে, জীবনে প্রথম একটা যাত্রাপালা লিখলাম সেটা আপনাদের জানাবো। গত একবছর ধরে একটা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছি। বঙ্গবন্ধু সাড়ে নয় মাস পাকিস্তানের জেলে বন্দি ছিলেন। ২৬ মার্চ, ১৯৭১ থেকে ৭২’র ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত লায়ালপুর, মিয়ানওয়ালী ও সিহালাতে আমার যাত্রাপালার বিষয় বঙ্গবন্ধুর এই দুঃসহ জেল জীবন। জেলের ভেতরে তার বিচার, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া মিয়ানওয়ালী জেলে তার নির্জন সেলের সামনে তার জন্যে কবর খুঁড়ে রাখা। পাকিস্তানিদের কাছে বঙ্গবন্ধুর নতি স্বীকার না করা, অনুকম্পা না চাওয়া, কোর্টমার্শাল চলাকালীন তার বীরোচিত মনোভাব ভুট্টোর ফাঁদে পা না দেওয়া, কোনো প্রলোভনে সাড়া না দেওয়া এসব নিয়ে বিষদভাবে পালাটা লিখেছি।
এসব বিষয় নিয়ে পড়তে গিয়ে আমার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধু কেবল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নন, তিনি তার সময়ে বিশে^র সেরা মানুষদের একজন। তার অকুতোভয় ও আপসহীন জীবনের কঠিনতম সময়টুকুু নিয়ে পালাটা লেখা শেষ করে আমি এমন উজ্জীবিত ছিলাম তা বলার নয়। কিন্তু নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘটে যাওয়া ওই বর্বরোচিত ঘটনাটা জানার পর আমার মনে হয়েছে কাকে নিয়ে আমি পালা লিখেছি। কাদের জন্য, কেন, সব পন্ডশ্রম মনে হয়েছে। কাদের জন্যে বঙ্গবন্ধু সেদিন ট্রায়ালে বিচারকদের সামনে বলেছিলেন ‘আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা, আমি এমন কিছু করবো না, যাতে আমার বাঙালি জাতি অপমানিত হয়। তোমরা আমাকে ফাঁসি দিলে দাও, শুধু একটা অনুরোধ আমার দেহটাকে তোমরা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিও। যেন সেখানে আমাকে সমাহিত করা হয়’। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পালাটা লিখতে লিখতে আমার মাথাটা আকাশের সমান উঁচু হয়ে গিয়েছিলো।... সে মাথা হেট হতে হতে মাটির সাথে মিশে গেছে, মাটির সাথে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :