আরিফুজ্জামান তুহিন: নোয়াখালী সারা দুনিয়াকে অতিক্রম করলো! স্বামী একটি বিয়ে করেছেন, এটি জানার পর স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে আসেন। এরপর স্বামীর সাথে আবার মেয়েটির যোগাযোগ হয়। এরপর স্বামীটি তার শ্বশুর বাড়ি স্ত্রীর সাথে দেখা করতে আসেন। এ সময় পাড়া গ্রামের ‘নীতিবাদী’রা মেয়েটির ঘরে কেন তার আগের স্বামী এসেছে, এটা বলে ঘেরাও করে। অথচ মেয়েটির তালাক হয়নি, মেয়েটি নতুন করে বিয়েও করেনি। নীতিবাদী গ্রামবাসী মেয়েটিকে নগ্ন করে ভিডিও করেছে। এ সময় মেয়েটি ছেলেগুলোর পা ধরেছে। কিন্তু ক্ষমা করেনি ‘নীতিবাদী’ যুবকেরা। এরপর? এরপর নীতিবাদী গ্রামবাসী মেয়েটিকে নগ্ন করে ভিডিও করে। এ সময় মেয়েটি ছেলেগুলোর পা ধরেছে। নগ্ন মেয়েটি নিজেকে ক্যামেরার আড়াল করতে বিছানার তোষক পর্যন্ত জাপটে ধরেছে। কিন্তু পুরুষকূলের তাতে মন গলেনি। ‘পুরুষ’ এর কী মন থাকে? হয়তো থাকে কিংবা থাকে না। তবে পুরুষেরা একটা শিশ্ন থাকে। কুৎসিত শিশ্ন। তার নিচে প্যান্ডুলামের মতো ঝুলে থাকে দুটি বিশ্রি কদাকর বিচি থাকে। বিচির মধ্যে শাস থাকে কিনা তা জানি না। তবে সে দুটি অনারবত বাড়ি খায়, ঝুলে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পুরুষকে জাগায়, বলে শিশ্নের গতির জন্যই তো দুনিয়াতে আসা। ‘প্যাট আর চ্যাটের জন্য দুনিয়া’। তো সেই চ্যাট ও বিচিওয়ালা ‘নীতিবাদী’ যুবকেরা মেয়েটিকেও ক্ষমা করেনি। হায় দুনিয়া। এমন মানব জনম নিয়ে আমার সত্যি নিখোঁজ হতে ইচ্ছে করে। তবে নীতিবাদী গ্রামবাসীর আলাদা একটা পরিচয় নিশ্চয়ই আছে। ঘটনার ৩২ দিন পর বিষয়টি সামনে এসেছে। এই ৩২ দিন নারীটির জন্য ৩২ লাখ বছরের সমান।
৩২ দিনের একেকটি দিন নারীটির ওপর দিয়ে কী গেছে সেই আন্দাজ করার মতো শক্তিশালী মন দিয়ে দুনিয়াতে জন্মাইনি। তবে এটুকু বুঝতে পারি, ক্ষমতাবান ও সরকারি দলের পৃষ্টপোষকতা ছাড়া এমন বর্বরতা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে এটাও স্মরণে রাখা দরকার। মানুষ যদি তার আত্মপরিচয়ে রুখে দাঁড়ায়, যদি একবার রুখে দাঁড়ায় দুনিয়ার সব শাসক তার সব পারমাণবিক বোমা জোগাড় করেও মানুষের উত্থান থামাতে পারবে না। কিন্তু একটা অমানুষের সমাজে মানুষ কেমনে জাগবে? হায় দুনিয়া। এমন মানব জনম নিয়ে আমার সত্যি নিখোঁজ হতে ইচ্ছে করে। আর যদি তালাকও দেয়, তাহলে এভাবে নগ্ন করে ভিডিও করতে হবে? দেশে একমাত্র ‘বিবাহবর্হিভূত যৌন সম্পর্কেই অপরাধ? দেশের তেল গ্যাস বিদেশীদের দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, পাটকল বন্ধ করছে, সারা দেশ দুর্নীতির গভীর সমুদ্র নিমজ্জন এসব পাপ না? এসব অপরাধ না? নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ভিডিওটা দেখলাম।
মনে হলো ভিডিওটা আপলোড করি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা করলাম না। করলাম না এ কারণে যে ফেসবুকের কমিউনিটি স্টান্ডার্ড ভায়োলেট করবে, ব্যবহারকারীদের মধ্যে দুর্বল চিত্তের মানুষ এটা দেখে ভয় পাবেন, ফেসবুক ভিডিও ডাউন করবে সে জন্য না। করলাম না, নিপীড়কের ইচ্ছেপূরণ হোক সেটি চাইনি। এ রকম ভয়াবহ নিপীড়ন, ভয়াবহ নিপীড়ন বিশ্বাস করুন আপনি শুধু ভাবতে পারেন কিন্তু দেখেননি। ফলে এই বাঙালির দেখা উচিত। বোঝা উচিত কেমন একটা শুয়োরের সমাজ তারা বানিয়েছে। কেমন একটা বাংলাদেশ তারা বানিয়েছে। নোয়াখালী যেন সারা দুনিয়ার হাহাকারকে অতিক্রম করে গেছে। এই কী মানুষ জনম? এই ভয়াবহ, পৈশাচিক নির্যাতনের বিচার হবে কি, হবে না; আমি জানি না। বিচারের প্রত্যাশাও করি না। আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি আমার ঘুমের মধ্যে ঘাতকেরা যেমন দাঁবড়ে বেড়ায় রোজ, তেমনি এই ভিডিও বহুদিন আমাকে দাঁবড়ে বেড়াবে। সত্যি পুরুষগুলো না থাকলে নিরাপদে নারীরা বের হতে পারতেন। ছি! পুরুষ, ছি! নীতিবাদ, ছি! চেতনাবাদ। ফেসবুক থেকে