সালেহ্ বিপ্লব : [২] স্বপ্ন সফল হয় না, কে বলে? ১৯৯১ সালে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, একদিন না একদিন নাঈমুল ইসলাম খান সাহেবের কাছে যাবো। বলবো, আমি খুব ভালো প্রেস রিলিজ লিখি, গল্প-কবিতা লিখি, চট্টগ্রামের কাগজে আমার লেখা ছাপা হয়। আমাকে একটা কাজ দেবেন, প্লিজ?
[৩] ১০ বছরের মাথায় তার সাক্ষাৎ পেয়েছি। আজকের কাগজ থেকে আমি সংবাদে যাই ২০০০ সালে। সে বছরই আমাদের ছেলের জন্ম, সে উপলক্ষে চাকরি ছেড়ে চট্টগ্রাম চলে গিয়েছিলাম। পূর্বকোণে কাজ করেছি কিছুদিন, ফিরে এসে ঢাকায় আর কাজ পাই না।
[৪] আজকের কাগজে গেলাম, চিফ রিপোর্টার মেসবাহ ভাইয়ের কাছে। তিনি নিতে রাজি। রাজি হলেন স্যারও (কাজী শাহেদ আহমেদ)। কিন্তু বেঁকে বসলেন নাবিল ভাই (কাজী নাবিল আহমেদ)। তার যুক্তি সহজ- বিপ্লব যে কন্টিনিউ করবে, সে নিশ্চয়তা লাগবে। কী আর করা! সিনিয়র কলিগ সবাই আমাকে নেওয়ার পক্ষে। কী করা যায়, মেসবাহ ভাই পরামর্শ করলেন- মাহবুব ভাই, বকর ভাই, চিনু ভাই, আফতাব ভাই, ইকবাল ভাই, খালেদ ভাই আর সমরদার সঙ্গে। তাদের পরামর্শ মতো নিয়ে গেলেন নাঈম ভাইয়ের কাছে। কেস খুলে বললেন। সহজ সমাধান যেন নাঈম ভাইয়ের হাতেই ছিলো। স্পেশাল রিপোর্ট দাও। আজকের কাগজে তখন স্পেশাল নামে একটা ডেস্ক বানিয়েছিলেন নাঈম ভাই, স্টাফ না হলেও রিপোর্টাররা সম্মানির বিনিময়ে রিপোর্ট দিতে পারতেন। ছাপা হলে প্রতি রিপোর্টে ৫০০ টাকা। তাই করতে লাগলাম। এরপর তো সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজ (প্রস্তুতি কাল), বাংলাবাজার পত্রিকা ঘুরে চ্যানেল আইতে গেলাম ২০০৩ সালে।
[৫] সেবার নাঈম ভাইয়ের অধীনে কাজ করলাম ঠিকই, কিন্তু স্টাফ না হওয়ার কারণে আজকের কাগজে তার কাছে খুব একটা কিছু শেখার সুযোগটা পাইনি।
[৬] ২০১৮ সাল। অনলাইন করে পেট চলে, কিন্তু মন ভরে না। না পারছি দাঁড়াতে, না পারছি সব ছেড়েছুঁড়ে চলে যেতে। সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখ শেষ হয়ে ২৪ শুরু হয়েছে। আমার অনলাইনে ফেসবুক থেকে একটা লেখা প্রকাশ করলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম, নাইমা মৌর সেই লেখাটা নাঈম ভাইয়ের আমাদেরসময় ডটকমও ছেপেছে। ভোরের দিকে নাঈম ভাইকে মেসেঞ্জারে নক করলাম। জানালাম, তিনটা কথা বলতে চাই। এক ও দ্ইু শেষ করার পর একটু বিরতি নিলাম। তিনি নিজেই জানতে চাইলেন, তিন নাম্বারটা বলো। বললাম, একটা চাকরি হলে ভালো হয়, খুব কষ্টে আছি। বললেন, বেলা ১১টায় আসো।
[৭] দুপুর এগারোটার ৫ মিনিট আগে পান্থপথের অফিসে গেলাম। বস তখন নিউজরুমে। আমাকে নিয়ে গেলেন তার রুমে। খুব অল্প সময়ের কথা। তিনি আমাকে দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র বার্তা সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ দিলেন।
[৮] বেতন নিয়ে কথা হলো। জানতে চাইলেন, অনলাইন করে কতো পাও মাসে, জানালাম। বললেন, ওই টাকায়ই শুরু করো। আমাদের এখানে দক্ষতা ও শ্রম বিবেচনায় বেতন নিয়মিত বাড়ানো হয়।
[৯] সিনিয়র বার্তা সম্পাদক থেকে প্রধান বার্তা সম্পাদক হলাম। এরপর নির্বাহী সম্পাদক। এর মধ্যে আমাকে অর্থনীতি থেকে আমাদের নতুন সময়ে পদায়ন করা হয়েছে। যে বেতনে জয়েন করেছিলাম, দেড় বছরের মাথায় সেটা ৩ গুণ হয়েছে।
[১০] নাঈম ভাইয়ের যে বিষয়টা আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে, সেটি হলো তার উপস্থিতি মানেই একটা কিছু শেখার সুযোগ। সেটা সরাসরি, ফোন বা ভিডিও কল। তার প্রতিটা আলোচনায় মেসেজ থাকে। আমি শিখছি প্রতিনিয়ত স্বপ্ন পূরণের আনন্দ নিয়ে।
[১১] জীবনের বড় একটা স্বপ্ন একশো ভাগ পূর্ণ হলো ২৭ বছর পর। নাঈম ভাইয়ের প্রতিষ্ঠানে আজ আমার তৃতীয় বছর শুরু হলো। কে বললো, স্বপ্ন সফল হয় না?
[১২] শুভ কামনা, প্রিয় নাঈম ভাই। আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘ হায়াত দিন। সতত শুভ কামনা।