স্বপন দেব: [২] মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানগুলোতে নানা জটিল রোগের শিকার হচ্ছেন অপুষ্টির শিকার চা শ্রমিক পরিবারের সদস্য। জরায়ু ক্যান্সার, চর্মরোগ, বিকলাঙ্গতা, রক্তশুন্যতা, পুষ্টিহীনতাসহ এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুসহ চা বাগানের নারী ও পুরুষরা। পাশাপাশি কুষ্ঠ ও যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে।
[৩] চা বাগানে যক্ষা ও কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও অনেক।
[৪] হীড বাংলাদেশ কমলগঞ্জের কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগের চা বাগানে ২০১৯ সনে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত রোগী ছিলো ৩৬৪ জন। ২০২০ সনের জানুয়ারিতে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত রোগী ২৫ জন। ২০১৯ সনে যক্ষায় আক্রান্ত সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটের চা বাগানে ৩ হাজার ২৫১ জন যক্ষা রোগী রয়েছে। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে ১২৬ জন।
[৫] সম্প্রতি হীড বাংলাদেশের যক্ষা, কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের কুষ্ঠ প্রকল্প ইনচার্জ পরেশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, এবছর করোনার কারণে মার্চ থেকে কার্যক্রম সম্ভব হয়নি। চা বাগান শ্রমিকদের বাড়ি ঘরের অবস্থা ও অসচেতনতায় চা বাগানে যক্ষা ও কুষ্ঠ রোগের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলক বেশী।
[৬] তিনি জানান, খোলা ও উন্মুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগ, মাদকাসক্তি, পুষ্টিকর খাবারের অভাবসহ নানা কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বিশাল চা শিল্প জনগোষ্ঠি।
[৭] বাগানে কর্মরত অনেক নারী ও পুরুষদের রক্তশুন্যতা, স্বাস্থ্যহীনতা, কুষ্ঠ, যক্ষা, বিকলাঙ্গ, চর্মরোগ, জন্ডিস, জরায়ু ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকিতে থাকতে দেখা যায়। প্রতিটি বাগানে বিকলাঙ্গতা, চর্মরোগীসহ জটিল ব্যাধীতে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন।
[৮] শমশেরনগর চা বাগানের নারায়নটিলার একই লাইনে চারজন বিকলাঙ্গ রোগী রয়েছে। এদের মধ্যে কিশোরী অনুকা চাষা (১৩), বয়োবৃদ্ধ অভিমনি চাষা (৬০), সীমা রেংগট (১৮) ও বাসন্তী গোয়ালা (৩৫)।
[৯] এছাড়াও কানিহাটি, দেওছড়াসহ বিভিন্ন চা বাগানে এধরণের অনেক রোগী পাওয়া গেছে। শ্রীমতি চাষা ও মনি গোয়ালা জানান, আমাদের চা বাগানের অনেকেই বিকলাঙ্গ, চর্ম, পুষ্টিহীনতা সহ নানা রোগব্যাধী নিয়েই কাজ করতে হয়।
[১০] জেলার সিভিল সার্জন ডা. তওহীদ আহমদ বলেন জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা চা বাগানের শ্রমিকদের যথাসাধ্য চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া জেলার সদর হাসপাতাল ও সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জটিল রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ