সুজন কৈরী: [২] সরকারের অনুমোদন ছাড়া মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানী খুলে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের কাছ থেকে আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ‘এ ওয়ান হ্যালথ কেয়ার’ এবং ‘এ ওয়ান বাজার লিমিটেড’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান।
[৩] ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলের আর কে মিশন রোডের ইত্তেফাক ভবনের পঞ্চম তলায় অবস্থিত ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। র্যাব-৩ এর সহায়তায় অভিযানের নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
[৪] তিনি বলেন, অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানটির এমডিসহ ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন-ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নুরুল ইসলাম (৪২), পরিচালক (অর্থ) মো. ফেরদৌস খান (৪৮), পরিচালক (প্রশাসন) মো. রেজাউল করিম মিন্টু (৫৬), পরিচালক (মানবসম্পদ) মো. আবুল কালাম আজাদ (৪০), পরিচালক আসাদুল্যাহ দেওয়ান (৪৬), পরিচালক মো. আব্দুস ছাত্তার (৩৭) এবং মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫০)। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৪৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিপুল পরিমান তথ্য প্রমানাদি জব্দ করা হয়েছে।
[৫] নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে ডেসটিনির মত গ্রাহক সংগ্রহ করে এমএলএম ব্যবসা করছিল। তারা যে নামে প্রতিষ্ঠান খুলেছে আদৌ তার কোনো অস্তিত্বও নেই। যা সম্পূর্ণ ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠান।
[৬] তিনি বলেন, তারা প্রথমে এ ওয়ান হ্যালথ কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনলাইনে ২০-২৫ হাজার গ্রাহক সংগ্রহ করে। গ্রাহক প্রতি প্রতিষ্ঠানটি ১০ হাজার টাকা করে সংগ্রহ করে। শুরুতে তারা যেসব গ্রাহককের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল, ওই সময় প্রাথমিকভাবে গ্রাহকের জন্য অনলাইনে একটা আইডি একাউন্ট দিতো। ওই একাউন্টে গ্রাহক প্রথম কিছুদিন তাদের টাকা জমা দেয়ার বিবরণী থেকে সব তথ্য দেখতে ও জানতে পারতো। কিন্তু কিছুদিন পর প্রতারক চক্রটি এ ওয়ান হ্যালথ কেয়ার নামের প্রতিষ্ঠানটির সাইট বন্ধ করে দেয় এবং পরে এ ওয়ান বাজার নামে আরও একটি সাইট খুলে গ্রাহক সংগ্রহ শুরু করে। এখানেও একই কৌশলে গ্রাহক সংগ্রহ করেছে প্রায় ১৫ হাজার। প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে সংগ্রহ করেছে। এমনকি সংগৃহীত গ্রাহককের অবস্থান বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানটিতে শেয়ার কেনার মাধ্যমে পরিচালকের পদও বিক্রি করেছে তারা। এজন্য ৪৬ হাজার ১০০ শেয়ার বিক্রি করেছে ১০৭ জন পরিচালককে।
[৭] পলাশ কুমার বলেন, অভিযানকালে আটকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় প্রতারণা ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করা হবে।