কামরুল হাসান মামুন: শ্রীলংকার পেরাদেনিয়া বিশ^বিদ্যালয় টাইমস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে ৪০১-৫০০ এর মধ্যে! কল্পনা করা যায়? বিশ^ র্যাংকিংয়ে এইরকম অসাধারণ পজিশন দেখে আমি অভিভূত। এইবার বলুন বাংলাদেশে কেন এতো শ্রীলংকান চাকরি করবে না? কেন গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন বেসরকারি অফিসে উচ্চ পদে এতো শ্রীলংকান চাকরি করছে? যেই দেশে এতো ভালো মানের বিশ^বিদ্যালয় থাকবে সেখান থেকেতো উচ্চ মানের মানুষ বের হবেই যারা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভালো বড় পদে চাকরি পাবে। আর আমরা কি পাঠাই? আয়া, বুয়া ঝি হিসাবে যারা আরবের শেখদের বিনোদনের অংশ। এরা ওখানে গিয়ে সম্মানতো পায়ই না উল্টো পদে পদে অত্যাচার ব্যাভিচার চলে। এছাড়া অন্য যারা আছে তারা সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে।
পেরাদেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪১ শতাংশ ছাত্র বিদেশি। এসব সম্মানের বিষয়। এছাড়া মেইল ফিমেইল রেশিও হলো ৫৪ : ৪৬! আমি একটু তাদের পদার্থবিজ্ঞানে বিভাগের ওয়েবসাইট ঘুরে এলাম। দেখি অনেকেরই গুগল সাইটেশন ৫০০শ’রও বেশি। আমরা জাতি হিসেবে সত্যিই কেবল নিচেই নেমে যাচ্ছি। শতাধিক বিশ^বিদ্যালয় কিন্তু কোন র্যাংকিংয়ে নেই। তাদের পেরাদেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৪ বছর পর জন্মেছে। কষ্ট লাগে এসব দেখলে। তারা আগায় আর আমরা পিছাই। আমাদের লজ্জায় মরে যাওয়া উচিত। কিন্তু সুখের বিষয় হলো আমাদের লজ্জা নেই।
আমরা এখনো মানুষের মূল্য বুঝতে শিখিনি। শিখেছি কেবল বাগাড়ম্বর করতে। মানুষতো হবে শিক্ষার মাধ্যমে। সেই শিক্ষা দেওয়ার মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানইতো আমাদের নেই। এক সময় সেন্ট গ্রেগরি নামে একটি মিশনারি স্কুল ছিল সেখান থেকে কত গুণী মানুষ বের হয়েছে জানেন? তাজ উদ্দিন আহমেদ, অমর্ত্য সেন, ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। একটা স্কুলর এই ইমপ্যাক্ট। শত শত বিশ্ববিদ্যালয় না বানিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের মত বিশ্ববিদ্যালয় একটি হলেই যে কি ঘটিয়ে ফেলতে পারে সেইটা বোঝার ঘিলু আমাদের নীতিনির্ধারকদের নেই। আমাদের দেশ এমনই দুর্ভাগা। We are in the state of abyss! ফেসবুক থেকে