কায়সার হামিদ : [২] সব মামলায় জামিন পেলেন কারান্তরীণ দৈনিক জনতার বাণীর সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খান। সর্বশেষ মামলা থেকে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) তাকে জামিন দেন যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের বিচারক মাহমুদুল হাসান।
[৩] মামলার শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন কক্সবাজার জেলা বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম ছিদ্দিকী, সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল মন্নান ও এডভোকেট রেজাউল করিম রেজা। মামলাটির বাদি ছিলেন টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা আবুুুল কালাম আজাদ।
[৪] এডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল মন্নান জানান, টেকনাফ থানায় দায়েরকৃত মামলার শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ফরিদকে পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন দেন। এখন তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাঁধা নেই।
[৫] ঢাকার বাসা থেকে ধরে এনে সাজানো অস্ত্র, বিদেশি মদ ও ইয়াবার মামলা থেকে বুধবার (২৬ আগস্ট) জামিন দেন কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল। মেজর (অবঃ) সিনহার হত্যা মামলার আসামি টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সর্বশেষ ৩টি মামলার তাকে আসামি বানিয়েছিলেন।
[৬] ফরিদুল মোস্তফা খানের পক্ষে নিযুক্ত প্রধান আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল মন্নান সব মামলা থেকে জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ফৌজদারী মিস মামলার মূলে জি.আর ১০২৫/২০১৯, (অবৈধ দুইটি অস্ত্র ও ৫ রাউন্ড গুলি) এবং জি.আর ১০২৬/২০১৯ (৪ হাজার পিস ইয়াবা) পুলিশের সাজানো মামলা দুইটি শুনানী শেষে বুধবার জামিন দেন বিজ্ঞ বিচারক। এই মামলা দুইটি ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টের ফরিদুল মোস্তফার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়ের করেছিল পুলিশ। এর আগে গত ১ মার্চ জি.আর ১০২৭/২০১৯ (বিদেশি মদ উদ্ধার) মামলায় জামিন প্রদান করেন একই আদালত।
[৭] তিনি আরো জানান, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপের দালাল মৌলভী মুফিজ ও জহিরের গায়েবি চাঁদাবাজির মামলা থেকে গত ১৩ আগস্ট জামিন প্রদান করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রাজজ মোহাম্মদ ইসমাইল।
[৮] এছাড়া ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বও টেকনাফ থানায় দায়েরকৃত মামলা ১৯ আগস্ট জামিন প্রদান করেন টেকনাফের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ। এ নিয়ে ফরিদুল মোস্তফার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৬টি মামলারই জামিন হলো। আশা করা হচ্ছে, ১১ মাসের কারাবাস থেকে সাংবাদিক ফরিদ আজকেই কারামুক্ত হয়ে ফিরে আসবেন স্বাভাবিক জীবনে। ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুরের বাসা থেকে সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
[৯] এরপর কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ার বাড়িতে তাকেসহ নিয়ে গিয়ে কথিত অভিযান চালানো হয়। ওই সময় গুলিসহ ২টি অস্ত্র, ৪ হাজার ইয়াবা ও বিপুল পরিমান বিদেশী মদের বোতল উদ্ধার হয় বলে পুলিশ দাবী করে। যদিওবা পরিবারের দাবী, এসব নাটক। সম্পূর্ণ সাজানো।
[১০] গত বছরের ৩০ জুন ফরিদুল মোস্তফা খানের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় চাঁদাবাজি মামলা রুজু হয়। এরপর তাকে পুলিশ হন্য হয়ে খোঁজতে থাকে। আত্মরক্ষায় ঢাকায় আত্মগোপনে চলে যায় ফরিদুল মোস্তফা। নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর গত বছরের ২৮ জুলাই পৃথক আবেদনও করেন।
[১১] সাংবাদিক ফরিদের পরিবারের দাবি, উক্ত আবেদনের তদন্ত না করে উল্টো টেকনাফ থানা ও কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম মিরপুর থানার পুলিশের সহায়তায় ‘ওয়ারেন্ট’ দেখিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। আইন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারাগারে না পাঠিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। সম্পাদনা : হ্যাপি