ইমরুল শাহেদ : [২] দীর্ঘদিনের অসুস্থতা নিয়ে গত কয়েক মাস থেকে বাড়িতেই চলছিল তার চিকিৎসা। হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় ৮ আগস্ট ভোর পৌনে পাঁটায় তাকে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
[৩] আলাউদ্দিন আলীর (৬৮) ছেলে শওকত আলী রানার ভাষ্য, শ্বাসকষ্টের তীব্র সমস্যা থাকায় চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্টে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এর আগে তিনি ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজেও চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া ব্যাংককের সুখুমভিত হাসপাতালে তার ক্যান্সার রোগের টানা তিন মাস চিকিৎসা হয়েছিল। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ফারজানা আলী মিমি ও মেয়ে আদ্রিতা রাজকন্যা।
[৪] হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে জানান, ‘আলাউদ্দিন আলী সাহেবের স্ত্রী আমাদের ভোর রাতে ফোন করে জানান যে উনার শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। তখনই আমরা অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে তাকে হাসপাতালে আনি। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখে লাইফ সাপোর্টে রাখার পরামর্শ দেন। তবে ডাক্তার বলেছেন, তার অবস্থা তেমন একটা ভালো নয়।
[৫] আলাউদ্দীন আলী একাধারে সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, বেহালাবাদক ও গীতিকার। গান লিখে এবং শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে তিনি ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। তিনি প্রায় ৩০০ ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। তিনি ১৯৭৪ সালে সন্ধিক্ষণ ছবির মাধ্যমে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। আলাউদ্দীন আলী বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান সৃষ্টি করেছেন।
[৬] বহু গুণে গুণান্বিত এই মানুষটির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর, মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরের টঙ্গীবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামে। দেড় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার মতিঝিলে এজিবি কলোনিতে চলে আসেন আলাউদ্দীন আলী। তিন ভাই, দুই বোনের সঙ্গে সেই কলোনিতেই বড় হন।
[৭] সঙ্গীতে প্রথম হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে। পরে ১৯৬৮ সালে যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন। শুরুটা শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তার সুরে গান করেছেন।
গত বছর প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।
