জাহিদুল কবীর: [২] অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে।
[৩] বেসরকারি ভাবে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী শাহীন চাকলাদার ১ লাখ ২৪ হাজার ৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ২ হাজার ১২ ও জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান পেয়েছেন ১ হাজার ৬৭৮ ভোট। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার বজলুর রশিদ।
[৫] করোনা ভাইরাস ও প্রচন্ড রোদ এবং গরমের মধ্যে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে হাজার হাজার ভোটাররা দীর্ঘ লাইন দিয়ে তাদের প্রার্থীকে ভোট দিলেও বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কোন পোলিং এজেন্টসহ কর্মী সমর্থকদের দেখা যায়নি। সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে গোপসেনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ৮০৪ জন। ওই সময়ের মধ্যে ৯৯০ জন ভোটার ভোট প্রদান করেন।
[৬] মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩৭ মিনিটে ভেরচী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার অধ্যাপক এনামুল হক জানান, তার কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ২৮৩ জন। ওই সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৯০০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভেরচী গ্রামের ভোটার আব্দুল হামিদ মোড়ল বলেন, বরাবরই এ এলাকাটি আওয়ামীলীগ সমর্থিত এলাকা। এখানে সব সময়ের জন্য ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট দিয়ে থাকে ভোটাররা।
[৭] চিংড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা খায়রুন্নেছা (৯০) ও সখিনা খাতুন (৭৫) বলেন, কোন নির্বাচনে ভোট দিতে ভুল করিনি। এবারও ভোট দিতে এসেছি। কাকে ভোট দিয়েছেন জানতে চাইলে জানান, এ কথা কাউকে বলা যাবে না।
এদিকে প্রতিটি কেন্দ্রেই মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক ¯েপ্রর ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু কয়েকটি কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
[৮] এ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তারা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার (নৌকা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা আবুল হোসেন আজাদ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি (এরশাদ) সমর্থিত প্রার্থী হাবিবুর রহমান (লাঙ্গল)। তবে বিএনপি এই উপনির্বাচনে করোনাকালীন সময়ে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচন থেকে সরে আসে।
[৯] কেশবপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ বজলুর রশিদ জানান, কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৩ হাজার ১৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ১২২ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৮৯৬ জন। ৭৯টি ভোট কেন্দ্রের ৩৭৪ টি ভোটকক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন ৭৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩৭৪ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও ৭৪৮ জন পোলিং অফিসার।
[১১] যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও রিটানিং অফিসার হুমায়ন কবির জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভোটাররা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাচ্ছন্দে ভোট দিয়েছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। কোন প্রার্থী অভিযোগ করেনি। ভোট কেন্দ্রের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি ১৮জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার ব্যাটালিয়ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
[১২] বিজয়ী শাহীন চাকলাদার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার পরে কেশবপুরের সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি, নেতাকর্মী ও জনগণ আমাকে গ্রহণ করেছেন। সেই দায়ভার মাথায় রেখে আমি কেশবপুরের উন্নয়নে কাজ করবো। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :