শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৫ জুলাই, ২০২০, ০২:৫৯ রাত
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০২০, ০২:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আলী রিয়াজ: এখন আলোচনার বিষয় করোনাভাইরাস পরীক্ষার জালিয়াতি

আলী রিয়াজ:  রিজেন্ট নামের একটি লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালকে কেন কিভাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং চিকিৎসার অনুমোদন দেয়া হয়েছিলো সেই নিয়ে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একে অপরকে দায়ী করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত বুধবার এ বিষয়ে দেয়া ব্যাখ্যায় বলেছিলো ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছে’। বিষয়টি লক্ষ করুন বলা হচ্ছে ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’। তার মানে কী? এই কর্তৃপক্ষ কি নামহীন-পদবিহীন মানুষ নাকি? এই ব্যাখ্যা স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের পছন্দ হয়নি। তারা নাখোশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রনালয় জানতে চেয়েছে এই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষটা কে? আমাদেরও প্রশ্ন এই ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’ কারা?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান কিন্ত মন্ত্রণালয় কিছু জানেনা কি ভাবে কী স্বাক্ষর হয়। কারণ কি? কারণ তারা এক ভবনে নেই -- এই রকম একটা হাস্যকর যুক্তিও দেয়া হয়েছে। কিন্ত এখনও এই জট খুলছেনা। ইতিমধ্যে আরো পাঁচ প্রতিষ্ঠানের করোনাভাইরাস পরীক্ষার অনুমোদন বাতিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কারনটা বেশ চমৎকার। ‘এই হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে কোভিড-১৯ আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরি পরীক্ষার অনুমোদন দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করতে পারেনি’, বলেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা (প্রথম আলো, ১৩ জুলাই ২০২০)। তা হলে এদের সক্ষমতা ছিলো কিন্ত তাঁরা চুক্তি করার পরে চুক্তি ভঙ্গ করেছে? নাকি সক্ষমতা ছিলো না? এটা তো আলু-পটল বিক্রির চুক্তি না যে চুক্তি না মানলে কেবল চুক্তি বাতিলই যথেষ্ট। দেশের মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা হয়েছে কিন্ত সেই নিয়ে আইনী ব্যবস্থার কোনও উল্লেখ নেই। আর যদি সক্ষমতা না থেকে থাকে তবে কী সেটা সরেজমিনে না দেখেই চুক্তি হয়েছে? আর অন্য যে সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে সেগুলো এর চেয়ে ভিন্ন হবে তা মনে করার কারণ নেই।

এই সব ঘটনার আগেই ঘটেছে জেকেজির ঘটনা। হাজারের বেশি করোনাভাইরাস পরীক্ষার জাল রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এখন চেয়ারম্যান আটক হয়েছেন। তাঁর এই আটকের ঘটনার মিডিয়া কভারেজ এবং তারপরে যেসব আলোচনা হচ্ছে সেগুলো নিয়ে কথা বলা নিষ্প্রয়োজন। কিন্ত মামলা হয়েছে কি ধারায় সেটা নিয়েও আলোচনা নেই। অপরাধের মাত্রার সঙ্গে তা সঙ্গতিপূর্ণ মনে হচ্ছেনা। সেই আলোচনা না হয় আপাতত আইনজীবিদের জন্যে তোলা থাকলো। কিন্ত তাঁকে আটকের পরে বিভিন্ন প্রতিবেদনে জেকিজের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্পর্ক বিষয়ে যা জানা যাচ্ছে তা বেশ কৌতুহলোদ্দীপক।

এপ্রিল মাসে জেকেজি নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব পায়, তারা বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহ করবে সেটাই ছিলো চুক্তি। কিন্ত জেকেজি অর্থের বিনিময়ে নমুনা সংগ্রহ করতে শুরু করে। “এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) লিখিতভাবে জেকেজিকে সতর্কও করে। তারপরও তারা এই কাজ চালিয়ে যায়” (প্রথম আলো, ১৩ জুলাই ২০২০)। ভালো করে লক্ষ করুন – ‘সতর্ক করা হয়”। চুক্তি ভেঙ্গে কাজ করছে, তাঁদের ওপরে কোন নজরদারী নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেই – তারা চালিয়ে যাচ্ছে।

এই নিয়ে আরো যা ঘটেছে তা বিস্ময়কর বলতাম যদি না তার সঙ্গে মানুষের জীবন মরনের প্রশ্ন জড়িত থাকতো। এই বিষয়ে প্রতিবেদনে কি লেখা হচ্ছে? “আগেই যে জেকেজিকে সতর্ক করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে পুলিশের দেওয়া তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, টাকার বিনিময়ে জেকেজি নমুনা সংগ্রহ করছে, এই খবর পেয়ে তিনি মৌখিকভাবে আরিফুল হক চৌধুরীকে সতর্ক করেছিলেন। তিনি এও বলেছিলেন, জেকেজি অধিদপ্তর থেকে যে সহযোগিতা পাচ্ছে, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি (আরিফ) সর্বোচ্চ অফিসের রেফারেন্স দিয়ে তাঁকে টেলিফোনে হুমকি দেন”। “ এই খবর পেয়ে” মানে কী? তদন্ত হয়েছিলো? ঘটনা সত্য ছিলো?

এই প্রতিবেদন পড়ে আমি বোঝার চেষ্টা করলাম – মহামারির সময়ে দেশের যে বিভাগটি সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব প্রাপ্ত সেই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় একজন সরকারী কর্মকর্তার মনে হচ্ছে যে এই নিয়ে তদন্তের দরকার নেই? তদন্ত হয়ে থাকলে সেই রিপোর্ট কী বলে? মৌখিক তিরস্কার যথেষ্ট শাস্তি! আচ্ছা আপাতত সেটাও বাদ দিলাম। কিন্ত এই কর্মকর্তাকে ‘হুমকি’ দেয়ার পরেও - পুলিশ বা আর কাউলে কিছু বলা হয়েছে? হলে নিশ্চয় তাও জানা যেত। তারচেয়েও বড় প্রশ্ন – যে “সর্বোচ্চ অফিসের রেফারেন্স দিয়ে” হুমকি দিয়েছিলেন সেটা কোন অফিস? সেই অফিসকে কি জানানো হয়েছিলো যে একজন আরিফুল হক চৌধুরী এই রকম হুমকি দেন? জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে এই সব প্রতিবেদন – যেগুলো কোন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পর্যন্ত নয়, তার এখানে সেখানে যা জানা যাচ্ছে তাতেই ভিমড়ি খাবার জোগাড়। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়