বিপ্রতীপ দাস, ক্রীড়া লেখক: [২] বর্তমান ক্রিকেটে চায়নাম্যান বোলার শব্দটি প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানের বেকায়দায় ফেলার জন্য ব্যবহার করা হয়। 'চায়নাম্যান' শব্দের সরল বাংলা দাঁড়ায় চীনের মানুষ, হ্যাঁ যুগান্তকারী এই কৌশলের উদ্ভাবক চীন বংশোদ্ভূত এক ত্রিনিদিয়ান ক্রিকেট তারকা, এলিস অ্যাসঙ।
[৩] ব্র্যাড হগ, কুলদীপ যাদবদের আদিপুরুষ অ্যাসঙ ১৯৩৩'র ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে ইংলিশ ব্যাটসম্যান ওয়াল্টার রবিন্সকে ঘূর্ণির যাদুটোনায় কুপোকাত করেন। অ্যাসঙের অফ স্ট্যাম্পের বাইরে করা একখানা বল ব্যাটসম্যান রবিন্স টার্নের সাথে খেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাঁকের মাত্রাটা বোধগম্য হয়নি তার। ফলে, ব্যাট আর প্যাডকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত করে লেগ স্ট্যাম্পে।
[৪] মাঠে উপস্থিত আম্পায়ারদ্বয় এবং তৎকালীন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা অভিনব সেই কৌশলী ডেলিভারির নাম দেন 'চায়নাম্যান', কার্যত অ্যাসঙের শৈল্পিকতা এবং মুখমণ্ডলে পিতৃবৎসুলভ চীনাদের সমকক্ষতার ছাপের দরুন তার প্রতি কুর্নিশ করেই এমন নামকরণ করা হয়েছিলো।
[৫] কুশলী আসঙের নাম চায়নাম্যানের উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিতি পেলেও বাকবিতÐার অতল সাগরে তার দুই প্রতিদ্ব›দ্বী ঢেউয়ের নাম মরিস লিল্যান্ড এবং বেক লিওলেন। ক্রীড়ালেখক বি, শ্রীরামের কলমে উঠে এসেছে লিল্যান্ডের নাম। আসঙের এই কীর্তির দু'বছর আগে হেডিংলিতে ইয়র্কশায়ার বনাম এসেক্সের [৬] ম্যাচে লিল্যান্ডের অচেনা এক ডেলিভারিতে ব্যাটসম্যান ব্যারন নিকোলাসকে হতভম্ব হয়ে নিজের উইকেট হারাতে হয়। ডেইলি মেইল পত্রিকায় বেড়োনো লেখায় স্পষ্টত উল্লেখ ছিলো 'লিল্যান্ডের চায়নাম্যানে কুপোকাত নিকোলাস'। চায়নাম্যান শিল্পের পথচলা কি তবে লিল্যান্ড আর আসঙের হাত ধরেই ? কিন্তু অতীত তো তাদের বিপক্ষে কথা বলছে।
[৭] আশির নব্বই দশকের গোড়ার দিকে প্রোটিয়া স্পিনার বেক লিওলেন তার অঙ্গুলির যাদুটোনায় স্ব বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনতে কারসাজি আরম্ভ করেন, যার সাযুজ্য ছিলো চায়নাম্যানের সাথেই। কর্পদকশূণ্য অবকাঠামোর ক্রিকেট আমলে আহামরি কিছু না করলেও এই আফ্রিকান চায়নাম্যান বোলিং বিপ্লবে নিজের যোগদান রেখেছেন যে বেশ স্বার্থকতার সহিতই, সে কথা বলাই বাহুল্য।
--ক্রিকফিন্স