শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ০৪ জুলাই, ২০২০, ১২:১৭ দুপুর
আপডেট : ০৪ জুলাই, ২০২০, ১২:১৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নুসাইবা রহমান সাফা: করোনার প্রভাবে ধর্মের দিকে ঝুঁকছে মানুষ?

নুসাইবা রহমান সাফা: মানুষ তাদের চোখের সামনে ভয়াবহ এক বিপর্যয়ের চিত্র দেখতে পাচ্ছে। তারা দেখতে পাচ্ছে কীভাবে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে ছোটাছুটি করেও লাভ হচ্ছে না। বিনা চিকিৎসায় বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রিয়জনের লাশ নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে। কাজেই চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। তারা আরও দেখতে পাচ্ছে যে, সরকার কোটি কোটি টাকা জনগণের জন্য বরাদ্দ করলেও সেই বরাদ্দকৃত অর্থ ও ত্রাণ সুসমভাবে বণ্টিত হচ্ছে না, বরং ত্রাণের চাউল পর্যন্ত চুরি হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ সরকার জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারছে না রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে। এদিকে করোনা ভাইরাস প্রতিনিয়ত ভয়াবহতার নিত্যনতুন সীমানা অতিক্রম করে যাচ্ছে।

এতোসব দেখে অনেকেই ধরে নিচ্ছেন, এতো ভয়ংকর এই ভাইরাস থেকে তাদেরকে দুনিয়াবী কোনো সিস্টেম বা ব্যবস্থা মুক্তি দিতে পারবে না। একমাত্র আল্লাহ, ঈশ্বর তথা স্রষ্টাই তাদেরকে হেফাজত করতে পারবে। কাজেই এখন বাঁচার জন্য একটাই উপায় আছে, সেটা হলো ধর্মের আশ্রয় নেওয়া। আমাদের এখানে যারা মুসলিম, স্বাভাবিকভাবেই তারা ইসলামে বিশ্বাসী বিধায় নামাজ কালাম আমল আখলাকগুলো বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যারা খ্রিস্টান তারা গীর্জায় যাচ্ছে, চার্চে যাচ্ছে। যারা হিন্দু তারা মন্দিরে যাচ্ছে ও পূজা-প্রার্থনাসহ তাদের বিভিন্ন রীতি-রেওয়াজ অনুসরণ করছে। অথচ কিছুদিন আগেও তাদের অধিকাংশই এইসব ধর্মীয় রীতি-নীতিকে গুরুত্বের সাথে নিতেন না। এখন তারা বিশ্বাস করছেন ধর্মকে, কারণ অন্য কোনো অবলম্বন তাদের নেই।
ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি মানুষের এই ঝুঁকে যাওয়ার কারণে অনেকেই আত্মতৃপ্তি অনুভব করতে পারেন, কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখে না- হঠাৎ উদ্ভূত হওয়া এই বিশ্বাসটা মোটেও সুদৃঢ় নয়। এ বিশ্বাস অতি ঠুনকো, অতি ক্ষণস্থায়ী এবং অতি টলটলায়মান। তারা কিন্তু কিছুদিন আগেও বিশ্বাস করত ধর্ম তাদের কোনো জাতীয়, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ইত্যাদি সঙ্কটের সমাধান দিতে পারবে না। কারণ ধর্ম সেকেলে, ধর্ম প্রাচীন, ধর্ম মধ্যযুগীয়; পক্ষান্তরে বর্তমান যুগের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদির সমীকরণ অতি জটিল। কাজেই এগুলো ধর্মের পক্ষে বোধগম্য নয়। এজন্য এই মানুষগুলোই কেউ গণতন্ত্রকে সমর্থন দিয়েছে, কেউ সমাজতন্ত্রকে সমর্থন দিয়েছে, কেউ একনায়কতন্ত্রকে সমর্থন দিয়েছে। তখন একবারও মনে হয় নাই যে, যেই ধর্ম আমাকে জাহান্নামের মত সঙ্কট থেকে মুক্তি দিতে পারে, সেই ধর্ম আমাকে দুনিয়াবী সঙ্কট থেকেও মুক্তি দিতে পারবে।

আজ তারা ধর্মের দিকে ঝুঁকছে, কারণ তাদের আলীঙ্গন করে নেওয়া ধর্মহীন মতবাদগুলো তাদেরকে প্রচ-ভাবে নিরাশ করেছে। কিন্তু আগামীতে কিছুটাও যদি আশার ঝলকানি তারা দেখতে পায় তাহলে আবারও ধর্মকে ছেড়ে সেই মতবাদের দিকেই ছুটে যাবে তাতে সন্দেহ নেই। তাদের বিশ্বাস অতি ঠুনকো ও পরিবর্তনশীল! অনেকটা সূর্যের মত- সকালে পূর্ব দিকে তো বিকেলে পশ্চিম দিকে। বলা বাহুল্য যে, বর্তমানে তারা ধর্মের যেই আমল আখলাক ও রীতি-নীতির দিকে ঝুঁকছে তা সম্পূর্ণটাই স্বার্থভিত্তিক। তারা নিজেদেরকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য এই পথ ধরেছে।

একটা উদাহরণ দেওয়া যায়। মুসা (আ.) যখন ফেরাউনের কাছে গেলেন ইহুদিদের প্রতি অন্যায়-অত্যাচার বন্ধ করার দাবি নিয়ে ও ইহুদিদেরকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলতে- মুসা (আ.) এর এই আহ্বান ফেরাউন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিল। ফেরাউন বলেছিল- আমিই তো তোমাদের রব। এরপর চূড়ান্তভাবে যখন ফেরাউনের উপর বিপদ ধেয়ে আসলো, সমুদ্রের পানিতে ডুবতে ডুবতে ফেরাউন যখন দেখল মৃত্যু অবধারিত- তখন সে বলল, ‘আমি ঈমান আনলাম মুসা ও হারুনের রবের প্রতি!’ কিন্তু আল্লাহ বললেন- “এখন?” ফেরাউনের জন্য তওবার দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তখন তার শাস্তির পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছিল। কাজেই জীবন বাঁচানোর জন্য সে যাই বলুক কিংবা করুক না কেন- সেটা কোনো কাজে আসলো না।

একইভাবে তওবার দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল নুহ (আ.) এর কওমের জন্য। নুহ (আ.) তার জাতিকে বহু শতাব্দীকাল যাবৎ সতর্ক করেছিলেন। যখন এটা নিশ্চিত হয়ে গেল যে, তারা ঈমান আনবে না। তখন আল্লাহ তাদের তওবার দরজা বন্ধ করে দিলেন। তাদের উপর ধেয়ে আসলো ভয়ংকর প্লাবন। আর নুহ (আ.) ও গুটিকতক মো’মেন-মো’মেনা নৌকায় আরোহন করে প্রাণ বাঁচালেন। যারা ধ্বংস হচ্ছিল তাদের মধ্যে নুহ (আ.) এর একজন সন্তানও ছিল। নুহ (আ.) সন্তানের জন্য কোমলতা অনুভব করলেন। তিনি চাইলেন সন্তানকে নৌকায় আশ্রয় দিতে। কিন্তু আল্লাহ নুহ (আ.) কে ধমক দিয়ে বললেন- এ তোমার পুত্র নয়। অন্যদের যেই পরিণতি হবে তারও সেই পরিণতি হবে অর্থাৎ তার তওবার দরজা বন্ধ। ঈষৎ সংক্ষিপ্ত। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়