ড. শোয়েব সাঈদ: অনেকেই অনুরোধ করেছেন এ বিষয়ে কিছু লিখবার জন্যে। গ্লোব বায়োটেকের সংবাদ সম্মেলনটি তাই মনোযোগ দিয়ে দেখলাম। বাংলাদেশের ফার্মা কোম্পানিগুলো প্রোডাকশন আর ফরমুলেশন ভিত্তিক, গবেষণা অর্থাৎ আরএন্ডডি’র অবস্থা খুব উন্নত নয়। ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনের মত উন্নত প্রযুক্তি ভিত্তিক এসাইনমেন্টে এদের এই প্রচেষ্টাকে তাই অভিনন্দন জানাতে হয়। তারা কতদূর যেতে পারবে সেই ভাবনা না ভেবে বলা যায় তাদের দেওয়া তথ্যে বিজ্ঞান ছিল, সঠিক তথ্যে অতিরঞ্জন ছাড়াই বৈশ্বিক অবস্থানের বাস্তব তুলনা ছিল। সফল হওক বা না হওক, একটি কর্পোরেট তার প্রজেক্টের প্রচারণা থেকে ব্যবসায়িক সুবিধে অর্জনের সুযোগ নেবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে ঘোষণাটি খুবই প্রিম্যাচুরড। তিনটি র্যাবিটের এই ট্রায়ালে একটি নেগেটিভ কন্ট্রোল, একটি পজিটিভ কন্ট্রোল আর একটি এক্সপেরিমেন্টাল সাবজেক্ট তারপর SDS PAGE দিয়ে ব্যান্ড সনাক্তকরনের তথ্য নিয়ে অন্তত আমি মিডিয়ার সামনে আসতাম না।নিউট্রালাইজিং এন্টিবডির গঠন, এন্টিজেন নিস্ক্রিয় করা আর এন্টিজেন-এন্টিবডি সংযুক্তির বিষয়গুলো সংবাদ সম্মেলনে যেভাবে বুঝানো হল, বাস্তবে এত সিম্পল হলে এতদিনে ভ্যাক্সিন ঘরে ঘরে পৌঁছে যেত।
এথিক্যাল এপ্রোভাল সহ রেগুলেটেড এনিম্যাল ট্রায়ালে সফল হওয়া সাপেক্ষে আলোচনায় আসাটা পেশাগতভাবে যৌক্তিক ছিল। ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনের সবটুকু পথই তো বাকী, অনেক দূর উনাদের যেতে হবে, এনিমেল থেকে হিউম্যান ট্রায়াল। উনাদের কর্পোরেট ওরিয়েন্টেশন এবং প্রচারণার জন্যে হয়তো আগেভাগেই ঘোষণা দিয়েছেন। উনারা অনেক তথ্য শেয়ার করেছেন, একটু খটকা আছে এ কারণে যে পেশাদার উদ্ভাবকরা যারা শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে চান, আগেভাগে এতো তথ্য দেন না, ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনের প্রবল প্রতিযোগিতায় এটি সচরাচর দেখা যায় না।
খারাপ লাগবে যদি উনাদের এমন কোন কৌশল থাকে সত্যিকারের কাজের চাইতে মিডিয়ার মাধ্যমে কোম্পানিটির প্রচার প্রসারের সুযোগ নেওয়া, দুইদিন পর পর দেশের নামকরা প্রিন্টিং আর টিভি মিডিয়া সাক্ষাৎকার দেওয়া। ইনোভেশন গবেষণাগার ছেড়ে যখন মিডিয়া কাভারেজের হট টপিক হয়ে যায়, তখন আর এগুতে পারেনা। বাংলাদেশে ফার্মা কোম্পানিগুলোর মিডিয়া কানেকশন/মালিকানা গবেষণার সত্যিকারের অবস্থা বুঝার অন্যতম অন্তরায়। এর ফলে দেখা যাচ্ছে জার্নালে পিয়ার রিভিউ প্রকাশনার চাইতে বিজ্ঞান চলে যাচ্ছে সংবাদ সম্মেলনে, আর ভীতিকর রকমের অপেশাদার বিজ্ঞান সাংবাদিকতায় অদ্ভুত ধরণের খবর তৈরি হয়, সালমোনেলার মত পরিচিত ব্যাকটেরিয়া হয়ে যায় নতুন ভাইরাস!!!
Nevertheless, approach can highly be appreciated. এই প্রশংসা যোগ্য কাজে আমরা পজিটিভ থাকতে চাচ্ছি আর অপেক্ষায় থাকলাম ভ্যাক্সিনের বৈশ্বিক দৌড়ে বাংলাদেশের অংশগ্রহণে গর্বিত হতে।
ফেসবুক থেকে নেওয়া।
আপনার মতামত লিখুন :