সুজন কৈরী : [২] বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক (যোগাযোগ) মেহেনাজ তাবাস্সুম রেবিন বলেন, ঘটনার পরপরই জড়িত আনসার সদস্য রফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
[৩] তিনি আরও বলেন, আনসার সদস্যরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেন। মুগদা হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্যও চাইলে নিজেই নমুনা পরীক্ষা বন্ধা করতে পারেন না। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ীই বন্ধ করার কথা কবলেছেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর হঠাৎ করে বন্ধ করার কথা বলার বিষয়টি সেখানে হয়তো রোগী বা সেবা প্রত্যাশি মেনে নিতে পারেননি। এরপর অনাকাঙ্খিত একটি ঘটনা ঘটে। এজন্য জড়িত ওই আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
[৪] জানা গেছে, শুক্রবার সকালে হাসপাতালে করোনা টেস্টের জন্য ৪০ জনকে টিকিট দেয়া হয়। কিন্তু ৩৪ জনের পর বেলা ১১টার দিকে আনসার সদস্যরা জানায় আজ আর পরীক্ষা হবে না। এসময় লাইনে দাড়িয়ে থাকা একজনের সাথে আনসার সদস্যের তর্কাতর্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে আনসার সদস্য তার গায়ে হাত তুললে হাতাহাতি শুরু হয়। ওই ঘটনার ছবি তোলার সময় নারী সাংবাদিকসহ দুই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয় আনসার সদস্যরা। দুই সাংবাদিককে বেঁধে রাখারও হুমকি দেওয়া হয়। ওই সময় সেখানে পুলিশ থাকলেও তারা ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলে চলে যান।
[৫] হাসপাতালের প্রধান ফটকের ভেতরে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফটো সাংবাদিক জয়ীতা রায় ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের ফটো সাংবাদিক হারুন অর রশীদ ওরফে রশীদ রুবেলের ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে।
[৬] হামলার শিকার সাংবাদিকরা বলেন, হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে তারা রোগী ও স্বজনদের লম্বা লাইন দেখতে পান। লাইনে দাড়ানোদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত এক মায়ের কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন এক যুবক। কিন্তু একজন আনসার সদস্য ভেতর থেকে বের হয়ে আজকে আর নমুনা না নেয়ার ঘোষণা দেন। ৪০ জনকে টিকিট দেয়া হলেও ৩৪ জনের নমুনা নেয়া হয়। ওই যুবক বিষয়টির প্রতিবাদ করেন একপর্যায়ে উভয়পক্ষে তর্কাতর্কি শুরু হয়। আনসার সদস্য রফিকুল যুবককে মারধর করে। টেনে হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যান। ওই সময় ঘটনার ছবি তুলতে দেখে আনসার সদস্যরা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। প্রতিবাদ করলে তারা মারতে এগিয়ে আসে। রোগীর স্বজনরাও ঘটনার প্রতিবাদ করেন।
[৭] সাংবাদিক রশিদ বলেন, গেট বন্ধ থাকায় আমি গেটের ওপর থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করি। তখন আনসার সদস্যরা থাপ্পড় মেরে আমার ক্যামেরার ফিল্টার ভেঙে ফেলে। এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে এক আনসার সদস্য আমাকে হুমকি দেন এবং সাংবাদিকদের গালিগালাজ করতে থাকেন এবং বেঁধে রাখার হুমকি দেন।
[৮] মুগদা থানার এস আই আলতাফ হোসেন বলেন, মুগদা হাসপাতালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। তবে থানায় কোনো অভিযোগ কেউ করেননি।
[৯] মুগদা জেনারেল হাসপাতাল উপ-পরিচালক আবুল হাসেম শেখ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের ভুল থাকতে পারে। যে কাজ করে তারই ভুল হয়। সাংবাদিকদের এভাবে অপমান করবে, এটাতো মেনে নেয়া যায় না। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করবো।