সুজন কৈরী ও ইয়াসিন আরাফাত : [২] ঘাটে ভেড়ার জন্য আমাদের বহনকারী মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সোজা যাচ্ছিল। ওই সময় ময়ুর-২ লঞ্চটি বাঁকাভাবে যাত্রা শুরু করে আমাদের লঞ্চের মাঝ বরাবর সজোরে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চটা কাত হয়ে ডুবে যায়। পুরোপুরি ডুবতে ১০ সেকেন্ডও সময় নেয়নি।
[৩] এভাবেই বর্ণনা দিচ্ছিলেন সোমবার সকালে বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে উদ্ধার হওয়া জীবিত যাত্রী মো. মাসুদ।
[৪] তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি কেবিনে ছিলাম। গ্লাস খুলে কোনোমতে বের হইছি। ভেতরে আমার আপন দুই মামা আফজাল শেখ ও বাচ্চু শেখ ছিলেন। তারা বের হতে পারেননি। তাদের খোঁজ করছি।
[৫] পুরান ঢাকার ইসলামপুরের গুলশানআরা সিটিতে কাপড়ের ব্যবসা করা মাসুদ বলেন, প্রতিদিন তিনি সকালে মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসে দোকান করেন। রোববার ময়মনসিংহ থেকে তার দুই মামা মুন্সিগঞ্জের বাসায় বেড়াতে আসেন। তাদের নিয়ে সোমবার সকালে লঞ্চের কেবিনে করে ঢাকায় ফিরছিলেন।
[৬] তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর লঞ্চে থাকা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জনের মতো যাত্রী আমরা সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারছি। বাকি যাত্রী কেউ উঠতে পারেনি। তারা লঞ্চের ভেতরেই ছিলেন।
[৭] জানা যায়, সকাল পৌনে আটটার দিকে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পথে ফরাশগঞ্জ এলাকায় ময়ূর-২ নামের লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে সেটি ডুবে যায়। কেরানীগঞ্জের একটি ডকইয়ার্ড থেকে মেরামত শেষে ময়ূর-২ নদীতে নামানোর সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, নেভি ও র্যাব।
[৮] এদিকে লঞ্চডুবির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ। একই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
[৯] অপরদিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চ মর্নিং বার্ড উদ্ধারে নারায়ণগঞ্জ থেকে রওনা দিয়েছে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়।
আপনার মতামত লিখুন :