শিরোনাম
◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে জামায়াতের কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল ◈ স্ত্রী আসলেই নারী কি না প্রমাণ দেবেন ম্যাখোঁ ◈ আগামী বছরের বইমেলার সময় পরিবর্তন ◈ সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা জানালো ভারত ◈ সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর: অবসরে বাড়ছে সুযোগ-সুবিধা, কমছে অপেক্ষাকাল ◈ আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকসহ আহত ৫

প্রকাশিত : ১৫ জুন, ২০২০, ০৫:০৭ সকাল
আপডেট : ১৫ জুন, ২০২০, ০৫:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এগারোটি সিরিজ লিখে সেবা প্রকাশনীর কাজীদা তার মাসুদ রানাকে তুলে দেন শেখ আব্দুল হাকিমের হাতে

সালেহ বিপ্লব : সেবা প্রকাশনীর জনপ্রিয় গো‌য়েন্দা সিরিজ ‘মাসুদ রানা’র বেশিরভাগ বই এর লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন নন, বরং শেখ আবদুল হাকিম।ধ্বংস পাহাড় দিয়ে মাসুদ রানা সিরিজের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এবং এই সিরিজের স্রষ্টা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন কাজী আনোয়ার হোসেন। মাসুদ রানা সিরিজের এ পর্যন্ত বই বেরিয়েছে ৪৬০টিরও বেশি। জনপ্রিয় এই সিরিজের প্রথম দিকের গুটিকয় বই ছাড়া বেশিরভাগ বইয়ের লেখক শেখ আবদুল হাকিম- এতদিন এই তথ্যটি জনশ্রুতি আকারে থাকলেও রোববার কপিরাইট অফিস এক রায়ে জানিয়েছে, মাসুদ রানার লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন নন, শেখ আবদুল হাকিম।যুগান্তর, ঢাকা ট্রিবিউন, টিবিএসনিউজ

সেবা প্রকাশনীর অসম্ভব জনপ্রিয় গো‌য়েন্দা সিরিজটির প্রথম ১১টি বইয়ের পর ২৬০টি বইয়ের লেখক শেখ আব্দুল হাকিম।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মাসুদ রানা স্বত্ব নিয়ে মামলা লড়ছিলেন শেখ আব্দুল হাকিম ও মাসুদ রানার আরেক লেখক ইফতেখার আমিন। আজ রোববার এক বছর ধরে চলা এ মামলার রায় ঘোষিত হলো। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এই রায় দিয়েছেন। যার ফলে শেখ আবদুল হাকিম দাবিকৃত মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি এবং কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে কপিরাইট সত্ত্ব পেতে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী জানান, কাজী আনোয়ার হোসেন চাইলে এ রায়ের বিরুদ্ধের আবেদন করতে পারবেন। তা অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে করতে হবে। এখানে তিনি হেরে গেলে, হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন।

তি‌নি আরও জানান, শেখ আবদুল হাকিমের দাবিকৃত ২৬০টি মাসুদ রানার বইয়ের মধ্যে একটি এবং কুয়াশার ৫০টি বইয়ের মধ্যে ছয়টিতে লেখক হিসেবে তার নামে কপিরাইট করা আছে। বাকিগুলোর কপিরাইট ছিল না। তবে সেগুলো তার লেখা, এটা তিনি প্রমাণ করেছেন। তবে কপিরাইট অন্তর্ভূক্তির কারণে এখন তাকে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। এর পর প্রতিটি বইয়ের লেখক হিসেবে তার নাম যাওয়ার পাশাপাশি, কপিরাইটও তার হয়ে যাবে।

এর আগে, ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আবদুল হাকিম 'মাসুদ রানা' সিরিজের ২৬০টি এবং 'কুয়াশা' সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে মালিকানাস্বত্ব দাবি করে সেবা প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ কপিরাইট অফিসে দাখিল করেন।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের এ রায়ে আরও  বলা হয়েছে, সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে কপিরাইট বোর্ড বা বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যন্ত আবেদনকারীর দাবিকৃত ও তালিকাভুক্ত বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হলো। এ ছাড়া প্রতিপক্ষকে আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ ও বিক্রিত কপির সংখ্যা এবং বিক্রয় মূল্যের হিসাব বিবরণী এ আদেশ জারির তারিখের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

কপিরাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আবদুল হাকিম অভিযোগ করার পরে অভিযোগকারী ও প্রতিপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে ওই বছরের ১১ ও ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ৪ নভেম্বর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে উভয়পক্ষ স্বপক্ষে নিজ নিজ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। কয়েক দফা উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপিত হয়।

রায়ে আরও বলা হয়, বিষয়টি বেশ জটিল এবং দেশের প্রকাশনা শিল্পের ক্ষেত্রে লেখক ও প্রকাশকের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্ব বিবেচনা করে, এর সন্তোষজনক ও সুষ্ঠু সমাধানের উদ্দেশ্যে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে এদেশের বিখ্যাত ও প্রথিতযশা কয়েকজন লেখক ও প্রকাশক এবং সেবা প্রকাশনীর সাবেক ব্যবস্থাপকের লিখিত মতামত চাওয়া হয়। যাদের মধ্যে ছিলেন লেখক বুলবুল চৌধুরী ও শওকত হোসেন, প্রখ্যাত শিল্পী হাশেম খান এবং সেবা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক ইসরাইল হোসেন খান। তাদের  লিখিত মতামতের ওপর ভিত্তি করেই রোববার রায় দেওয়া হয়েছে।

রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় শেখ আবদুল হাকিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমিই মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের লেখক। এ রায়ের মাধ্যমে তারই স্বীকৃতি এল। দীর্ঘ দিন মাসুদ রানা বিক্রিবাবদ আমাকে যে প্রচুর টাকা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, এখন সেই পাওনা টাকা আদায়ের লড়াই শুরু হলো।'

এ প্রসঙ্গে কাজী আনোয়ার হোসেনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে মাসুদ রানার লেখক হিসেবে দাবি পেশ করা আরেক লেখক ইফতেখার আমিনের মামলার কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়