ইমতিয়াজ মাহমুদ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাঁপা ফুল গাছ রয়েছে। বুয়েটেও নাকি আছে, রমনায় আছে। ওই দিকে আরও কোথায় কোথায় যেন আছে। চন্দ্রিমা উদ্যানেও আছে। আমি থাকি বনানীতে। এইদিকে কোথাও কি চাঁপা ফুল গাছ আছে? গুলশানের ওই বড় পার্কটায় চাঁপা ফুলের গাছ আছে বলে শুনেছি- তবে যিনি বলেছেন, তিনি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারেননি। শেরাটনের মোড়ে, সংসদ ভবনের এই পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানে যাওয়ার পথটার কাছে এইরকম কয়েকটা জায়গায় ট্রাফিক সিগন্যালে ছেলেমেয়েরা চাঁপা কদম এইসব ফুল বিক্রি করতে আসতো।
কেন জানি না শহরের এই প্রান্তে রাস্তায় কখনো কাউকে চাঁপা ফুল বিক্রি করতে দেখিনি। একবার একটা মেয়েকে দেখেছিলাম কাকলীর মোড়ের এখানে কদম ফুল নিয়ে দৌড়াচ্ছে। হাত উঁচিয়ে ডাকতে ডাকতে সিগন্যাল সবুজ হয়ে গেল, কদম ফুল আর নেওয়া হয়নি। কিন্তু চাঁপাফুল কখনো নয়। এদিকের ফুলের দোকানগুলোও বড় ইয়ে- চাঁপাফুল বোধহয় ওদের দোকানে ওঠার মত জিনিস নয়। এইসব দোকানে সুগন্ধি ফুল মিলে না। বিদেশি আর দেশি সব উজ্জ্বল ঝলমলে ফুল- কামনা বাসনা রহিত রূপসী মডেলদের মতো। প্রেমহীন জলবায়ুহীন উজ্জ্বল রূপ। চাঁপাফুল নেই।
বসন্ত চলে গেছে, গ্রীষ্মও অদ্ধেক গেল চলে, এইবার তবে কি চম্পা তোমার মিলবে না সাক্ষাৎ! চাঁপা ফুলের সুবাসটা উত্তাল লাগে। হালকা ফুলকা মৃদু মিষ্টি সুবাস নয়- তীব্র ঝাঁঝালো সুবাস। একদম ঠোঁটের কাছে নিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাসে টেনে নেবেন ঘ্রাণ- দেখবেন কি দুর্দান্ত এ জিনিস! বকুলের গন্ধও বেশ, কামিনিত গন্ধেরও তীব্রতা আছে বটে, কিন্তু চাঁপা ফুল সে তো আলাদা ব্যাপার হে। ছোটবেলায় দেখতাম আমার মামনি, মুমু খালা আর মনি আপা এরা বড় সাদা খালি বোতলে ফিটকিরির সাথে পানি মিশিয়ে তাতে চাঁপা ফুল রাখতেন। বোতলের মুখটা থাকতো মোম দিয়ে একদম এয়ারটাইট করে সিল করা। এইভাবে চাঁপাফুল থাকতো অনেকদিন- কয়েক বছর। এই জিনিসও আজকাল সম্ভবত হয় না। না, ঐরকম বোতলে ভরা চাঁপাফুল নিয়ে আমার আগ্রহ নেই। কোথায় পাবো একগুচ্ছ চকচকে সোনালী চাঁপার ফুল? ফেসবুক থেকে