সাবিনা শারমিন : সেদিন আব্দুর রশিদ নামে ভাটারা এলাকায় একটি ফার্মেসিতে ইউনাইটেড গ্রুপের একজন সিকিউরিটি গার্ড ওষুধ কিনতে গিয়ে ফার্মেসির মেঝেতে পড়ে মারা গেছেন। পুলিশের তথ্যানুযায়ী তিনি করোনা নয়, হার্টের রোগী ছিলেন। এটি বর্তমান সময়ের ক্ষুদ্র একটি চিত্র যা ভীষণভাবে অ্যালার্মিং। হ্যাঁ বিশ্বব্যাপী করোনার তা-বে অন্যান্য রোগীরা কি তাদের অসুস্থতার কথা কি চেপে যাচ্ছেন? এতে করে আব্দুর রশিদের মতো অনেক মানুষই হয়তো হুটহাট করে মারা পড়তে পারেন। তাই করোনা রোগীদের প্রায়োরিটি দিতে গিয়ে ক্যান্সার, স্ট্রোক কিডনি, হার্টের রোগীরা হয়তো পারতপক্ষে তা প্রকাশ না করে একেবারেই চেপে যাচ্ছেন। কারণ অন্যান্য রোগের জন্য স্পেসিফিকালি কোনো হাসপাতাল নির্ধারিত ও বরাদ্দ নেই। তাই অন্যান্য রোগীরা হয়তো মুখ নাক বুজে কঠিন প্রলংড সিকনেস চেপে যাচ্ছেন। কিন্তু রোগ চেপে রাখলেই কি রোগ নিয়ন্ত্রিত থাকে? তাতো নয়। বরং চেপে যাওয়ায়, নিয়মিত ফলোআপ না হওয়ায় অলক্ষ্যে অবহেলায় আরও বেশি ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া অন্যান্য রোগ নিয়ে হাসপাতালে রোগী ছুটে গেলেও তাদের করোনা ছোঁয়াচে বলে হয়তো অ্যাডমিশন মিলছে না। বা ছুটে যাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলাফল ভয়ানক অনিবার্য মৃত্যু। তবে মুকুটধারী এই মহারাজা করোনার কারণে বা অন্য কারণে মৃত্যু হলেই যে সব কিছুর অবসান হয়ে যাবে তাও তো নয়। করোনার এই পিক সময়ে এখন হাসপাতালের বাথরুমেও লাশ রাখার জায়গা মিলছে না। মিলছে না গোসল দেওয়া ও জানাজা দেওয়ার মানুষ।
তাই এই শৃঙ্খলিত সময়ে পরিবারের দীর্ঘ মেয়াদের অসুস্থ মানুষগুলোর জন্য পরিবারের সুস্থ্য সদস্যরা বাসায় বসে অনলাইনে নতুন ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বরং প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সে সঙ্গে তাদের ঘরমুখী আনন্দের উৎস খুঁজে দেওয়ার জন্য কনিষ্ঠ সদস্যরা চেষ্টা করতে পারে। শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা, বাগান করা, সেলাই, পুতুল খেলা, পেপার পড়ে শোনানো। পুরনো দিনের গল্প বলা, পুরনো সিনেমার গল্প বলা, গান গাওয়া, শিশু ও পেটদের নিয়ে নানা রকম খেলাধুলা করা যায়। কয়েকদিন আগে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রয়াত ড. সাদাত হোসেনের ছেলে তার পিতা-মাতার প্রকৃত সঙ্কটাপন্ন অবস্থা নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে জানা যায় সে সময় বাবার সঙ্গে সঙ্গে তার মায়েরও হার্টের সমস্যা গুরুতর হয়। এই উভয় সংকট করুণ অবস্থার কারণে তিনি মনে করেন করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ এবং জরুরি। শুধু স্বাস্থ্যকর খাবারই নয়, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি এবং ভালোলাগার কাজগুলো করলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, এমনটিই বলেছেন ইমিউনোলজিস্ট এবং ভ্যাকসিনোলজিস্ট ড. ফেরদৌসি কাদরী। সো নো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, টেনশন, মন খারাপ। বাঁচতে হলে ভালো থাকতে হবে। আর প্রতিষেধকের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধের ব্যবস্থাপত্রও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তার জন্য ডাক্তার হওয়া লাগে না। ফেসবুক থেকে