আজম খান : দুনিয়ার আসল ভাইরাস হলো হিপোক্রেসি। অনেকে অজ্ঞানতাকে শত্রু মনে করেন। আমি করি না। করোনাভাইরাস আজ আছে কাল নেই। ওষুধ আবিষ্কার হবে। কিন্তু এই হিপোক্রেসির ওষুধ কী? ভাইরাসের ৩৮০ বার বিবর্তিত হওয়ার গপ্প শেয়ার দিয়ে বেড়াতে পারে। বিবর্তনবাদের সূত্র ধরে ভাইরাসের বিবর্তিত হওয়ার কারণে আতঙ্কিত হতে পারে, কিন্তু নিজের বেলায় বিশ্বাস করবে তার প্রজাতিরে কেউ আসমান থেকে টুপ করে ছেড়ে দিছে। আবার জিজ্ঞেস করবে, তাহলে মানুষের বিবর্তন হয় না কেন। এককোষী প্রাণী আর বহুকোষী প্রাণীর বিবর্তনের সময় কতো লাগে, কেন লাগে এটা ক্লাস নাইনের জীববিজ্ঞান বইতে দেওয়া আছে। এখন হিপোক্রেসির কথা কেন বললাম এবার শোনেন। দুনিয়াতে এই যে এতো মানুষ মরছে তবুও বাস্তবতাটা কেউ উপলব্ধি করবে না। বিশেষত আমাদের মতো ফকিন্নি দেশগুলার ফকিন্নি মানসিকতাওয়ালা নাগরিকদের দেশে তো আরও নয়। এবারের ক্রাইসিস বুঝিয়ে দিচ্ছে শিক্ষা, গবেষণায় এগিয়ে না থাকলে চিকিৎসা অবকাঠামো এসবে এগিয়ে না থাকলে সামনের দিনগুলাতে এ রকম ভাইরাস আসবে আর মারবে।
এন্টি-বায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরি হওয়াটাও কিন্তু বিবর্তনবাদেরই প্রমাণিত থিওরি। এই রেজিস্ট্যান্সও আপনারে খাইয়ে দিতে পারে। আপনে কোন ... বিশ্বাস করেন তাতে এসব রোগশোকের বালটাও ছেঁড়া যায় না। আরও ছেঁড়া যায় না যদি আপনের দেশের ২০০০ নিউক্লিয়ার বোমা, ৫০০০ যুদ্ধ বিমান আর ৫০টা বিমানবাহী রণতরী থাকে। এসবে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া মারতে পারবেন না। পাঁচ লাখ মসজিদ, দুই লাখ মন্দির, এক লাখ চার্চ বানিয়েও লাভ নেই। বিপদের দিনে সবার আগে এই দোকানপাটগুলোই বন্ধ হয়।
তাহলে বলদ, হিপোক্রেট বললাম কেন? কারণ দুনিয়ার যে কোনো দেশে সরকার ঘোষণা দিক কালকে নতুন ডিজাইনের ট্যাংক নামাবে, সঙ্গে সঙ্গে অগুনতি হাতে তালি মিলবে। শেখ হাসিনা, মোদী, ইমরান খানেরা আজকে ঘোষণা দিক কেউ দুই হাজার মসজিদ বানাবে, কেউ দুই হাজার মন্দির, হাততালির গগন বিদারী আওয়াজে দুই-চার কিলোমিটারের মধ্যে কানে তালা লেগে যাওয়ার যোগাড় হবে। আবার কেউ বলুক, ওই সবে কমিয়ে শিক্ষা, গবেষণায় বেশি বরাদ্দ দাও। হাসপাতাল বাড়াও। এসব বললে রাশিয়া, আমেরিকার মতো দেশ হলে কমিউনিস্ট, দেশদ্রোহী তকমা পাবেন। তবে ওইখানে অ্যাকশন কম। অ্যাকশন হয় আমাদের এদিকে। উপমহাদেশের লোকেরা চাপাতিটাপাতি দিয়ে ব্যাপক জনসমর্থন সহকারে মাথাটা নামিয়ে দেবে। ফেসবুক থেকে