সুজন কৈরী: রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে রোববার ম্যাগনেটিক রাইস পুলার কয়েন ব্যবসার প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড। তারা হলেন, জসিম উদ্দিন (৪২), সুজন মিয়া (৩২) এবং লাল মিয়া।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রকে ৯০ লাখ ৪ হাজার টাকা দিয়ে প্রতারিত হন জাতীয় পার্টির সাবেক এক সংসদ সদস্য শিল্পপতি প্রকৌশলী এম তালহা। এরপর তার দায়ের করা মামলার তদন্তের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত বছরের জুলাইয়ে ওই শিল্পপতিকে বহু মূল্যবান কয়েন থাকার বিষয়ে জানায় প্রতারক চক্রটি। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের এই কয়েনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারেনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) কাছে এগুলো কোটি টাকায় বিক্রি করা যাবে। কৌতুহলী হয়ে কয়েন দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ওই নেতা এবং এ বিষয়ে দরদামও করেন। এরপর প্রতারক চক্রটি ভিকটিম তালহাকে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে আমিনুল ইসলাম নামে চক্রের আরেক সদস্য ছিল। তিনি নিজেকে ইউরেনিয়াম এনার্জি লিমিটেডের সিনিয়র টেকনিশিয়ান হিসেবে পরিচয় দিয়ে তালহাকে বলেন, দেশের অনেক নামি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তার মাধ্যমে কয়েনের ব্যবসা করে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এরপর তালহা আগ্রহ দেখালে চক্রের একাধিক সদস্য বিভিন্ন সময়ে তার বাসায় যান এবং বিভিন্ন কথা বলে কয়েন ব্যবসায় বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে।
সিআইডি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, একপর্যায়ে তালহা কয়েন কিনতে আগ্রহী হওয়ায় তার কাছ থেকে কয়েনের ইউনিট ক্রয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে রিপোর্ট সংগ্রহ, প্যাকিং প্রক্রিয়া, বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধির বিভিন্ন ব্যয় বহন, বিক্রয় মধ্যস্থতাকারী এজেন্টের পাওনা অগ্রিম প্রদানসহ বিভিন্ন কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। পরে প্রতারিত হওয়ার বিষয়ে বুঝতে পেরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বনানী থানায় মামলা করেন। যার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। এরই প্রেক্ষিতে বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।