লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পাঠানটারী এলাকা থেকে জোংড়া ইউনিয়নের কুমারটারী এলাকা পর্যন্ত কৃষি জমির ফসল নষ্ট করে খাল খনন করা হচ্ছে।
এতে ওই এলাকায় শত শত বিঘা আবাদী জমি ও জমির ফসল নষ্ট হওয়ায় ২ শত ৭৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আদালতের স্বরণাপন্ন হয়েছে। আদালত কৃষকদের ফসল ও জমির ক্ষতিপুরণ দেয়ার পর খাল খননের কাজ শুরুর নিদের্শ দিলেও সেই নিদের্শ অমান্য করে খাল খননের চেষ্টা করছেন ঠিকাদার ও তার লোকজন। ফলে আদালতের নিদের্শ অমান্যসহ এ খাল খনন যেন কৃষকের গলার কাটা হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকায় ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার খাল খননের প্রকল্প গ্রহন করেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান রফিকুল ইসলাম ফরহাদ নামে এক ঠিকাদার। আইন অনুয়ায়ী খাল খনন শুরু করার আগে জমি অধিগ্রহন ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপুরণ দেয়ার নিয়ম রয়েছে।
কৃষি জমি অধিগ্রহনের নিয়মে আরো বলা হয়েছে, প্রয়োজনে তিন গুন বেশি মুল্য দিয়ে কৃষি জমি অধিগ্রহন করতে হবে। কিন্তু এ প্রকল্পে কোনো কিছু না মেনেই হঠাৎ করে ঠিকাদার খাল খনন শুরু করেন। এতে শত শত বিঘা জমি ও ওই সব জমির উঠতি ফসল নষ্ট হয়।
পরে স্থানীয় কৃষকরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মহামান্য হাইকোর্টের স্বরণাপন্ন হয়।
মহামান্য হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কৃষকদের জমির সঠিক মুল্য প্রদান ও ক্ষতিপুরুণ দেয়ার নিদের্শনা দিলেও এখন পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখে নাই। উল্টো বিভিন্ন সময় কৃষকদের নানা ভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে খাল খননের চেষ্টা করেই যাচ্ছেন ঠিকাদারের লোকজন।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জমির উদ্দিন, বিনয় চন্দ্র ও আব্দুল বাফেত আলী বলেন, ঠিকাদারের পক্ষে পাটগ্রামের সামসুল হাজী নামে এক ব্যক্তি প্রায় সময় ভেকু এনে খাল খননের চেষ্টা করেন। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখান মাসসুল হাজীর লোকজন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন সামসুল হাজী ও তার লোকজন।
এ বিষয়ে ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম ফরহাদের সাথে একাধিক বার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দাবি, সকল নিয়ম মেনেই খাস জমিতে খাল খনন করা হচ্ছে।
পাটগ্রামের ইউএনও মশিউর রহমান বলেন, ওই খাল খননের কারণে যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের ক্ষতিপুরুণের জন্য মহামান্য হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সেই নিদের্শনা মেনে ক্ষতি পুরুণ দেয়ার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি ক্ষতিপুরণ না দেয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারকে নিদের্শ দেয়া হয়েছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ