সুজন কৈরী : পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেয়ায় দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রাতে বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই গৃহকর্মীকে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ইশতিয়াক আবেদীনের বাসা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৪।
এর আগেও একই বাসা থেকে আরও দুই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ না করায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীদের স্বজনরা।
উদ্ধার ভুক্তভোগীদের দাবি, বেতন না দেয়াসহ কাজে একটু গাফিলতি মনে হলেই গৃহকর্ত্রী সাবরিনা বেগম অমানুষিক নির্যাতন চালাতেন। কাজে একটু এদিক সেদিক কিংবা দেরি হলেই কিল-ঘুষি মারা হতো। শুধু গৃহকর্ত্রী নন, বাড়ির অন্য কর্মচারিদের দিয়েও নির্যাতন করা হতো। কখনো কখনো দায়িত্বরতদের নির্যাতনের মাত্রা পছন্দ না হলে ফের চড়াও হতেন সাবরিনা। অত্যাচারের মাত্রা বেশি হলে মাঝে মাঝে চিকিৎসকের কাছে নেয়া হলেও কোনো ওষুধ দেয়া হতো না। এমন নির্যাতনের মধ্যেই ওই বাসায় ৮ বছর কাটিয়েছেন উদ্ধার ৩ গৃহপরিচারিকা। শত অনুরোধ করার পরও পরিবার বা স্বজনদের দেখতে দিতেন না বাসার কর্তা ব্যক্তিরা।
বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার গৃহপরিচারিকা বলেন, একটা কাজ রেখে আরেকটা করতে গেলেও দেরি হওয়ার অযুহাতে মারধর করা হতো। মারধরে কখনো কখনো শরীর থেকে রক্তও বের হতো।
ওই বাসায় কাজ করা বয়স্ক অপর গৃহকর্মী বলেন, আমার মা মারা যাওয়ার সময় শেষ বারের মতো মায়ের মুখটিও আমাকে দেখতে দেননি মালিক।
র্যাব-৪ অধিনায়ক মো. মোজ্জামেল হক বলেন, গৃহকর্মীর সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে দেয়া হতো না। এমন একটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা উদ্ধার করেছি। পরে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না করায় কাউকে আটক করা হয়নি। তিনি বলেন, আমি মনে করি উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার পরও গৃহকর্মীর সঙ্গে এমন আচরণ করা ওই বাসার মালিকের ঠিক হয়নি।