আমিরুল ইসলাম : প্রয়াত অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। নায়ক হয়ে উঠার পথ মোটেও মসৃণ ছিলো না রাজ্জাকের। অভিনয় জীবনের সূচনা করতে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে। সিনেমার নায়ক হওয়ার স্বপ্ন ছিলো। তাই রাজ্জাক ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সিনেমার উপর ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে এক রাতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এক হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
পরের দিন ২৬ এপ্রিল পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী লক্ষ্মী ও পুত্র বাপ্পারাজ এবং পীযূষ বসুর দেওয়া একটি চিঠি ও পরিচালক আব্দুল জব্বার খান ও শব্দগ্রাহক মণি বোসের ঠিকানা। ঢাকায় এসে কমলাপুরের ছোট্ট একটি বাসায় মাসিক ৮০ টাকা ভাড়ায় থাকা শুরু করেন। আব্দুল জব্বারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আব্দুল জব্বার তাকে অভিনয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে সুভাষ দত্ত ও এহতেশামের মতো পরিচালকদের সঙ্গে রাজ্জাকের পরিচয় হয়। ১৯৬৬ সালে ‘ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে রাজ্জাকের। ৬৭ সালে মুক্তি পায় নায়ক হিসেবে তার প্রথম ছায়াছবি বেহুলা। রোমান্টিক হিরো ছিলেন রাজ্জাক। যার সঙ্গেই জুটি গড়েছেন, সেটাই হিট। রাজ্জাকের বিপরীতে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে অভিনেত্রী সুচন্দা, কবরী, ববিতা ও শাবানাকে।
তিনশটিরও বেশি চলচ্চিত্রের নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। তার দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে অনেক সিনেমা দর্শক হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।