সুজিৎ নন্দী: ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পর্যাপ্ত লোকবল, ফগার ও হুইলব্যারোসহ অন্যান্য মেশিন-যন্ত্রপাতির সংকটের কারণে মশক নিধন কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে বছরজুড়ে কাজ করার ঘোষণা থাকলেও ৩/৪ মাসের ব্যবধানে তাদের কার্যক্রমের গতি কমে এসেছে। এডিসের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই কিউলেক্স মশার উপদ্রব বেড়েছে রাজধানীতে। ডেঙ্গু ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন ওষুধ ব্যবহার করছে না ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আধুনিক ওষুধ ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সবকিছু সিস্টেম মেনে করা হচ্ছে। সবচেয়ে ভালো ওষুধ ব্যবহার করছি। ওষুধ দেয়ার জন্য যারা কাজ করছে তাদের অবহেলা করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিএনসিসির একাধিক সূত্র জানায়, নতুন বা পুরনো নয়, ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে কম। তবে ভিআইপি এলাকায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এখনও এক লাখ ১০ হাজার লিটার সরাসরি ব্যবহার উপযোগী (রেডি ফর ইউজ) নতুন ওষুধ আছে। এই ওষুধ প্রস্তুত করতে যে পরিমাণ কাঁচামাল বা ম্যালাথিউন প্রয়োজন, সেটি চীন থেকে এলসির মাধ্যমে আনা হয়েছে। আর পুরনো যে কোম্পানিকে চার লাখ লিটার ওষুধ দেওয়ার জন্য আগে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, সেই কার্যাদেশের ওষুধ সরবরাহ এখনও শেষ হয়নি। কার্যাদেশ বাতিলও হয়নি।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা নিজ নিজ ওয়ার্ডের মশক নিয়ন্ত্রণ, পরিছন্নতাসহ যে কোনো বিষয়ে দায়ী থাকবে। যার যার কৃতকর্মের জন্য তাকেই জবাবদিহিতা করতে হবে। যেখানে কাউন্সিলরের উপস্থিতি নেয় সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, ওষুধের একটি উপাদান অকার্যকর। বাকি দুটি উপাদানের কার্যকারিতা আছে। ওষুধ দেয়া চলছে। আমরা গতি বাড়াবো।
ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ৫৭টি ওয়ার্ডে তাদের ৪৩৮ জন মশকনিধন কর্মী আছেন। এর মধ্যে স্থায়ী ২৭১ ও অস্থায়ী ১৪৮ জন। সুপারভাইজার আছেন ১৯ জন। দক্ষিণ সিটিতে বর্তমানে ফগার মেশিন আছে ৫৫৯টি, আর স্প্রে মেশিন আছে ৫৫২টি। ডিএনসিসির সূত্র জানায়, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে স্থায়ী ২৭০ জন কর্মী আছেন। এ ছাড়া আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২শ’ বেশি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর ডিএনসিসিতে ২৩৮টি ফগার, ২০টি মিস্ট ব্লেয়ার মেশিন নতুন কেনা হয়েছে।
একাধিক কীটতত্ত¡বিদ জানায়, প্রতি বছর এই সময় মশার উৎপাত বাড়তে থাকে, তাই আমাদের উচিত আরও বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। আসলে প্রতিটি ওয়ার্ডে যত সংখ্যক মশক নিধন কর্মী প্রয়োজন সেই তুলনায় আমাকের লোকবল কম।এর মধ্যও আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এর সঙ্গে নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু