ইয়াসিন আরাফাত : প্রতি মণ ধানে কৃষকদের এখন লোকসান গুণতে হচ্ছে অন্তত ৫০০ টাকা। এতে বিঘা প্রতি তাদের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলে উৎপাদন খরচ উঠাতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।
কৃষকদের দাবি, সরকার প্রতি মণ ধানের দর ১ হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও সব কৃষক সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। বাজারে মাত্র ৫শ’ থেকে ৬ শ’ টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকায়। গেলো বছর একই সময় প্রতিমণ ধানের দর ছিলো ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর আমনের ফলনও ভালো হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। ধানের দাম নিয়ে হতাশ তারা। এবার এক মণ ধান উৎপাদনে বীজ বপন থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত দিনমজুরি ও সার-কীটনাশকসহ প্রায় ৭০০ টাকা খরচ হয়। অথচ গতকাল বুধবার এক মণ ধান ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়। তাদের মতে, প্রতি মণ ধান কমপক্ষে ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হলে কিছুটা লাভ থাকে। কিন্তু বর্তমান বাজার দরে উৎপাদন খরচ অনুযায়ী প্রতি মণে তাদের ২০০ টাকা করে লোকসান গুণতে হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, সরকারিভাবে ১ হাজার ৪০ টাকায় প্রতি মণ ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সব কৃষক সে সুবিধা পাচ্ছেন না। আর এ সুযোগে ফড়িয়ারা ধানের দাম বলছে সাড়ে ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা। কৃষকদের দাবি, এ হিসাবেই প্রতি মণ ধানে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে অন্তত ৫০০ টাকা। প্রতি বিঘায় এ লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। চাষিদের দাবি প্রশাসনের মনিটরিং থাকলে কৃষক লাভবান হতেন।
এ প্রসঙ্গে বাগেরহাটের কৃষক শাহজাহান আলি জানান, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় পুরো মৌসুমে সেচ দিয়ে চাষ করতে হয়েছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পরই অধিকাংশ আধাপাকা ধান পড়ে যায়। ফলে ধানে চিটা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, যেখানে বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২২ মণ করে ধান হওয়ার কথা সেখানে ১৬ থেকে ১৭ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। যে কারণে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচও উঠছে না।
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার কয়েকজন কৃষক বলেন, এবার আমন চাষ করে লাভতো দুরের কথা উৎপাদন খরচ তোলাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাজারে ধান বিক্রি করে প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। সম্পাদনা : মাজহারুল ইসলাম