খোকন আহম্মেদ, বরিশাল : জেলার বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়ি থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর্যাব ও পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
রোববারস ( ৮ ডিসেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বানারীপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) জাফর আহম্মদ বলেন, নিহত মরিয়ম বেগমের পুত্র সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ৩০২ ধারাসহ বেশ কয়েকটি ধারা রয়েছে।
এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি ছুরি, খোয়া যাওয়া স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতরা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।
জাফর আহম্মদ আরো জানান, মামলায় কোনো নামধারী আসামি নেই। অজ্ঞাতদের আসামি করা হলেও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। তবে ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পূর্ব রায়পাশা গ্রামের চুন্নু হাওলাদারের পুত্র গ্রাম্য কবিরাজ জাকির হোসেন ও তার সহযোগি জুয়েলকে আটক করা হয়েছে। দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তবে আটককৃতদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে কিনা এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কিনা সে বিষয়ে ওসি কিছু জানাতে চাননি।
এদিকে ঘটনার রহস্য উন্মোচন হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, দ্রুত হত্যার রহস্য উন্মোচন ও জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সূত্রমতে, শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে ওই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের ঘর থেকে তার মা মরিয়ম বেগম (৭০), মেজ বোনের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শফিকুল আলম (৬০) ও খালাতো ভাই মো. ইউসুফ হোসেনের (২২) লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল শেষে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শনিবারই সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে স্বজনরা দেশের বাহিরে থাকায় ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো মর্গের ফ্রিজে রাখা হয়েছে। স্বজনরা দেশে ফিরে মরদেহগুলো গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করবেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, লাশগুলো যে বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, সে বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের ভবন নির্মাণের সময় জাকির হোসেন নামের আটককৃত ব্যক্তি রাজমিস্ত্রী কাজ করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি (জাকির) গ্রাম্য কবিরাজের কাজও করতেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, প্রবাসীর পরিবারের কয়েকজন সদস্যর সাথে ভন্ড কবিরাজ জাকিরের গভীর সখ্যতা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী আব্দুর রবের স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশু ও তার ভাইয়ের মেয়ে বানারীপাড়ার চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজের এইচএসসি প্রথমবর্ষের ছাত্রী আছিয়া আক্তারের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরেই জাকির হোসেন ও তার সহযোগি জুয়েলকে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর অনেক তথ্যই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে আসতে শুরু করে। যারমধ্যে প্রণয়, ঝাড়ফুঁকসহ বেশ কিছু ঘটনা রয়েছে। তবে শুরুতে এ পরিবারের সদস্যরাই জমিজমা নিয়ে বিরোধের কথা বলে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করা হয়েছিলো। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি ঘটনাই গভীরভাবে তদন্ত করে দেখছেন। সম্পাদনা : জেরিন মাশফিক