জনকণ্ঠ: নব্য জেএমবি, আনসার আল ইসলাম ও হিযবুত তাহরি এই ৩ জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটস (আইএস) ও আল কায়েদা পন্থী বলে পরিচিত। এই ধরনের তথ্য পেয়েছে জঙ্গী সংগঠনগুলোর নিবিড় পর্যবেক্ষণকারী তদন্ত সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থা। এছাড়া দেশে নিষিদ্ধ ৮জঙ্গী সংগঠনের মধ্যে এই ৩টি জঙ্গী সংগঠনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন তথ্যও পেয়েছে তারা। অনলাইন ফোরামে এই জঙ্গী সংগঠনগুলোর আছে প্রায় ৩শ সক্রিয় জঙ্গী সদস্য। উগ্র ধর্মান্ধদের সংগ্রহ করে জিহাদ করতে চায় তারা। এ জন্য কর্মী সংগ্রহের উদ্দেশে অনলাইন ফোরামে সক্রিয় এসব জঙ্গী সদস্য।
গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই জঙ্গী সংগঠনগুলো তৎপরতা কৌশলগত কারণে দৃশ্যমান নয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করে তারা ‘জিহাদে’ নামতে চায়। আর এ কাজে তারা ব্যবহার করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। অনলাইন ফোরামে সক্রিয় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে ধীরগতিতে এগুচ্ছে তারা। অনলাইনে বহুল প্রচলিত, জনপ্রিয় ও বিতর্কিত ইস্যুর আলোচনা উস্কে দিয়ে জঙ্গীরা নিজেদের মতবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জঙ্গীগোষ্ঠীগুলোর বিশেষ নজরে আছে। ভারতে বিজেপির নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর থেকে জঙ্গীবাদের তৎপরতার কারণে বাংলাদেশও ঝুঁকির মধ্যে আছে। এ জন্য আলকায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট বা একিউআইএস বাংলাদেশকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। আনসার আল ইসলাম নববর্ষ উদযাপন, শব-ই-বরাত পালন, মিলাদ বা মৃত্যুর পর প্রচলিত কিছু আচার অনুষ্ঠান নিয়ে অনলাইন ফোরামে প্রশ্ন তুলে উগ্র ধর্মান্ধতা ছড়াচ্ছে। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান ও হাদিস সম্পর্কে নিজেদের ভাষ্যও এসব আলোচনায় যুক্ত করে সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্ত করছে। এর ফলে বুঝে না বুঝে অনেকেই তাদের প্রচারিত মিথ্যা মতবাদকে সত্য বলে ধরে নিচ্ছে।
২০১৩ সালে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার খুনের আগে তাদের তৎপরতা সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিলো অন্ধকারে। ২০১৪ সালে আল কায়েদা বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারে তাদের উপস্থিতির কথা ঘোষণা করে। তখন থেকেই আল কায়েদার ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্টের অংশ হিসেবে কাজ শুরু করে আনসার আল ইসলাম। ওই বছরই তারা দু’টি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় । অনুলিখন: ইয়াসিন আরাফাত, সম্পাদনা : মাজহারুল ইসলাম