ইয়াসিন আরাফাত: এই কার্যক্রমের আওতায় পরীক্ষামূলক ভাবে পশ্চিমবঙ্গের ৬ জেলার ৩০০টি সরকারি এবং সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত স্কুলে এই গুডটাচ-ব্যাডটাচ-এর শিক্ষা দেবে দেশটির সরকার। প্রাথমিক পর্যায়ে যদি প্রকল্পটি সফল হয় তবে তা আগামী দিনে রাজ্যের সব স্কুলেই শেখানো হবে। আর এই শিক্ষা দেয়ার দায়িত্বে দেয়া হয়েছে চাইল্ড রাইট্স অ্যান্ড ইউ নামের একটি সংস্থাকে। এই সময়
স্থানীয় গণমাধ্যম সুত্রে জানা যায়, স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে চলতি বছরে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছিলো পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা অধিদপ্তর। সেখানেই ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এমন বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিলো। ছাত্রছাত্রীদের যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে সজাগ করতে স্পর্শ সম্পর্কে ধারণা দিতে উল্লেখ করা হয়েছিলো নির্দেশিকায়। অস্বস্তিকর কোনও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা যাতে সাহসের সঙ্গে 'না' বলতে পারে, সেই শিক্ষাও দিতে বলা হয়েছিলো সেই নির্দেশিকায়। আর তা মেনেই শুরু হতে চলেছে এই পরীক্ষামূলক প্রকল্প।
জানা যায়, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন হেনস্থা ঠেকাতে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা, পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের রিপোর্ট ও পরামর্শ এবং বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা, শিক্ষা পরিষদের সুপারিশকে একত্র করে শিশু নিরাপত্তা সংক্রান্ত এই নির্দেশিকা গাইডলাইন তৈরি করেছে দেশটির স্কুলশিক্ষা অধিদপ্তর। এই নির্দেশিকা রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি সব স্কুলের জন্যই। নির্দিষ্ট সময় পর পর এই ধরণের ক্লাসের আয়োজন করার জন্য প্রধানশিক্ষকদের ওপরে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এই নির্দেশিকায় । এর পাশাপাশি এই ধরনের ক্লাসের অগ্রগতি কেমন হয়েছে, তা নিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর ৩মাস অন্তর একটি রিপোর্টও পাঠাতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায় । প্রথমশ্রেণি অর্থাৎ ৬বছর বয়সের আগে কোনও শিক্ষার্থীকে এই ধরনের ক্লাসে রাখতে না করা হয়েছে নির্দেশিকায়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্কুলের আগে এই শিক্ষা শুরু করতে হবে শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়েদেরই। স্থানীয় পেরেন্টাল কনসালট্যান্ট পায়েল ঘোষের বলেন, 'গল্প বলার মতো ছোট ছোট করে শিশুদের গুডটাচ-ব্যাডটাচ বোঝানোর শিক্ষা মাবাবাদেরই দিতে হবে। আদর করার ছলে যতই কোনও পরিচিত মানুষ বাচ্চার দিকে এগিয়ে যাক, সতর্ক থাকতে হবে অভিভাবকদেরই। গোপনাঙ্গ বা প্রাইভেট পার্টস সম্পর্কে একেবারে ছেলেবেলা থেকে মা-বাবাকেই এই শিক্ষা দিতে হবে।
এ বিষয়ে পায়েল ঘোষ কিছু গাইডলাইন দিয়েছেন যেমন, শরীর সম্পর্কে খুব ছোটবেলা থেকেই অবহিত করুন। মাবাবা এবং ডাক্তার ছাড়া আর কেউ তার শরীরের কোন অঙ্গ ছুঁতে পারে না, এই ধারণা তাদের মাঝে তৈরি করুন। যেকোনও রকম অস্বস্তিজনক কার্যকলাপে বাচ্চাকে বাধা দিতে শিখান, প্রয়োজনে চিৎকার করে প্রতিরোধ করতে বলুন। গল্পের ছলে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করুন, শিশুর ওপর কোনও অত্যাচার হচ্ছে কি না।
তিনি আরও বলেন, সতর্ক থাকতে হবে, শিশু না চাইলেও কেউ যদি জোর করে আদর করতে চায়। কেউ যদি আড়ালে গিয়ে বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করে। কেউ যদি উপহার এনে বা লোভ দেখিয়ে বাচ্চাকে সকলের কাছ থেকে আলাদা করার চেষ্টা করে।
ওয়াইএ/এমআই
আপনার মতামত লিখুন :