মুসবা তিন্নি : বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতেই এখন কোনো না কোনো সবজি চাষ হচ্ছে। বাড়ির পাশে এসব সবজি চাষ করে নিজেদের সবজির চাহিদা পূরণ করছেন। আবার অতিরিক্ত হলে বাজারে বিক্রি ও করছেন অনেকে। সবজি চাষ করে অনেক চাষী অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। অনেক পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা।
বাড়ির চালায় সেজে আছে বড় বড় চাল কুমড়া। বাঁশে তৈরি মাছানে মাচাঁনে ঝুলছে শিম। ধরে আছে সজনা। কোথাও আবার বাড়ির পাশ ঘেষে পটল, কল্লা, শষা, বেগুন লাল শাকসহ নানা রকমের নতুন নতুন শীতের সবজি রয়েছে ক্ষেতে।
এসব সবজি চাষ করতে বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না, উৎপাদন খরচ কম পরে। এতে লাভের পাল্লা বেশি থাকে। এছাড়া, সবজিতে পরিবারে চাহিদায় মেটাচ্ছে। ফলে দিনে দিনে গ্রামে সবজি চাষ বেড়েই চলছে।
বরেন্দ্র অঞ্চল হিসাবে পরিচিত রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জে, নাচোল, রহনপুর, নওগাঁর জেলায় শত শত কৃষক এখন ধান চাষ ছেড়ে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ শুরু করেছেন। সবজি চাষে বরেন্দ্রে মাটিতে যেন এক নীরব বিপ্লব ঘটছে।
এদিকে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে ৮ বছর ধরে রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো ধান ছেড়ে অন্য ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষি বিভাগ।
কৃষিবিদেরা বলছেন, পানিসাশ্রয়ী ফসলের চাষ বাড়াতে গিয়ে এ বছর রাজশাহী জেলা সবজি উৎপাদনে দেশসেরা হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজশাহীতে ২২ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন হয়েছে ১৮ দশমিক ১২ মেট্রিক টন। মোট উৎপাদনের পরিমাণ ছিলো ৪ লাখ ২ হাজার ৭৯০ মেট্রিক টন।
কৃষকেরা জানান,অন্যের জমি বর্গা নিয়ে বোরো ও আমন ধান চাষাবাদ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ধান চাষে বেশি খরচ পড়ে। বোরো আবাদে পানির সমস্যাতেও পড়তে হয়।
এছাড়া, বাজারে ধানের দাম না পেয়ে কয়েক বছর ধরে লোকসান গুনতে হচ্ছিলো। তাই ধান চাষ বাদ দিয়ে অনেক কৃষক ৩/৪ বছর আগে সবজি চাষ শুরু করেছেন। সফলতাও পাচ্ছেন তারা।
তানোর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমশের আলী জানান, বরেন্দ্রের মাটিতে এখন প্রচুর পরিমাণে সবজি চাষ হচ্ছে। প্রতিদিনি কৃষকেরা তাদের ক্ষেতের টাটকা সবজি স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন শহরে পাঠাচ্ছে। সবজি চাষ করে অল্প জমি থেকে বেশি আয় সম্ভব হওয়াই দিনে দিনে এর পরিধি বাড়ছে। সম্পাদনা : এইচ
আপনার মতামত লিখুন :