তসলিমা নাসরিন : আরবাব ফাহাদের গুণের বর্ণনা করতে গিয়ে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-পড়শি, চেনা পরিচিত সবাই বলছেন আরবাব মেধাবী ছিলো এবং আরবাব পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো। মেধাবী হওয়াটা নিশ্চয়ই গুণ, কিন্তু একুশ বছর বয়সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াটা তো গুণ নয়, বরং দোষ। বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে ব্রহ্মা-ের উৎপত্তি, বিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। সাত আকাশের উপর এক সর্বশক্তিমান বসে আছে, সে ছ’দিনে আসমান জমিন বানিয়েছে, আদম হাওয়াকেও মাটি দিয়ে বানিয়েছে, কথা শোনেনি বলে জমিনে ফেলে দিয়েছে, কেউ একজন ডানাওয়ালা ঘোড়ায় চড়ে তাকে এবং তার বানানো স্বর্গ-নরক দেখে এসেছে এসব আজগুবি অবিজ্ঞান আর হাস্যকর গাল গপ্প কোনো বুদ্ধিমান কেউ বিশ্বাস করতে পারে? আবরার পড়তো হয়তো বিজ্ঞানের বই, পরীক্ষা পাসের জন্য পড়তো। তার বিজ্ঞানমনস্কতা ছিলো না।
নিজস্ব চিন্তার শক্তি ছিলো না। একে আমি পড়ুয়া বলতে পারি, মেধাবী বলবো না। আবরার ছিলো নিব্রাস ইসলামদের মতো। একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো, কিন্তু মাথায় চৌদ্দশ বছর আগের অবিজ্ঞান আর অনাধুনিকতা। আবরার অফিসিয়ালি শিবির না করলেও শিবিরের মতো চালচলন আর চিন্তাভাবনা বানিয়েছিলো। তাতে কী। শিবিরদেরও বাঁচার অধিকার আছে। তাকে যারা পিটিয়েছিলো আমার বিশ্বাস, মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে পেটায়নি। কিন্তু মাথায় আঘাত লেগেছে, মরে গেছে। যারা পিটিয়েছিলো তাদের শাস্তি অবশ্যই হতে হবে। গ্রেপ্তার হয়েছে অলরেডি। ২.নির্বাচিত মন্তব্য : রাজিব নূর খান দিন দিন এদেশের মানুষ হিংস্র হয়ে উঠছে। অমানবিক হয়ে উঠছে। একসময় মানুষের জন্য মানুষের মায়া-মমতা ছিলো। এখন রাস্তায় কেউ মাথাঘুরে পড়ে গেলে ফিরেও তাকায় না। ইদানীং মানুষ এতোটাই বিবেকহীন আর হৃদয়হীন হয়েছে যে, বাসে একজন মায়ের মতো বয়সী মহিলা দাঁড়িয়ে থাকলেও তাকে বসার সুযোগ দেয়া হয় না। ফেসবুক থেকে