আমিন মুনশি : সামর্থ্য অনুযায়ী যখন যে ধরনের কাপড় পাওয়া যায়, তা পরিধান করাই উত্তম। রাসুল (সা.) প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাপড় রাখতেন না এবং বেশি অভিজাত কাপড়ের প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিল না। যখন যে ধরনের কাপড় পাওয়া যেত, সেটাই তিনি পরিধান করতেন। (জাদুল মাআদ : ১/৫৩) তবে নবিজির (সা.) সাদা রঙের পোশাক প্রিয় ছিলো। তিনি বলেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর সামনে যাওয়ার সর্বোত্তম পোশাক সাদা পোশাক।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজা)
তিনি আরো বলেন, ‘সাদা কাপড় পর এবং সাদা কাপড় দ্বারা মৃতদের কাফন দাও। কেননা এটা অপেক্ষাকৃত পবিত্র ও পছন্দনীয়।’ (আহমদ, তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ) সাদার পরেই তাঁর পছন্দনীয় রং ছিল সবুজ। তবে তাতে হালকা সবুজ ডোরা থাকা পছন্দ করতেন। একেবারে নির্ভেজাল লাল পোশাক খুবই অপছন্দ করতেন। (শুধু পোশাক নয়, বরং অন্যান্য জিনিসে লাল রং ক্ষেত্র বিশেষে নিষিদ্ধ করেছেন। তবে হালকা লাল রং এর ডোরাকাটা কাপড় তিনি পরতেন। অনুরূপ হালকা হলুদ (মেটে রং) এর পোশাকও পরেছেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ সুন্দর, তিনি সুন্দরকে পছন্দ করেন। অহংকার হলো সত্য গ্রহণে অনীহা ও মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা।’ (মুসলিম : হা. ১৪৭)
সব পোশাক ঢিলেঢালা হওয়া উচিত। যেসব পোশাকে সতরের কাঠামো দৃষ্টিগোচর হয়, তা দিয়ে পোশাকের সুন্নত আদায় হয় না। (আপকে মাসায়েল : ৭/১৬৫) নারীদের জন্য সালোয়ার-কামিজ পরিধান করা উত্তম। তবে শাড়ি পরিধান করাও জায়েজ। (আলমগিরি : ৫/৩৩৩) অহংকার আসে এমন কাপড় পরিধান না করাই বাঞ্ছনীয়। (আলমগিরি : ৫/৩৩৩) এমন টুপি ব্যবহার করা সুন্নাত, যা মাথার সঙ্গে লেগে থাকে। টুপির রং সাদা হওয়াও সুন্নত। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩৩০)
পোশাকের মধ্যে সাদা পোশাক স্বাস্থ্যসম্মত সে বিষয়ে শরীরবিজ্ঞানীদের দ্বিমত নেই। কেননা, সাদা পোশাকে মন যেমন সাদা ও প্রফুল্ল হয় অন্য কোনো পোশাকে তা হয় না। দ্বিতীয়ত, সাদা কাপড়ে ময়লা জমলে তা চোখে পড়ে। অন্য যে কোনো রংয়ের কাপড়ে তা দেখা যায় না। শরীরে ময়লা লাগা, ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পোশাক ব্যবহার করা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাই সাদা কাপড়ই উত্তম। সবুজ রং সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, চোখের দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করে। সূর্যের যে সাতটি রং আছে সবুজ তার মধ্যে অন্যতম। যদি গাছের পাতা এই সূর্যরশ্মি না পায় তবে সবুজ রং ধারণ করতে পারে না।
আপনার মতামত লিখুন :