রবিউল আলম : কোরবানি চলে গেছে। কোরবানির চামড়া নিয়ে নাটকের পর নাটক চলছে। কোরবানির চামড়ার দাম কমানো, পচানো, ট্যানারির মালিকদের চামড়া না কেনা, ব্যাংকের টাকা নিয়ে কোরবানির চামড়া রক্ষার দায়িত্ব এড়িয়ে চলা, পোস্তার আড়তদারদের কম দামে চামড়া ক্রয় করার সুযোগ করে দেয়া এসব নাটকের অবসান হওয়াতে এখন নতুন নাটকের দৃশ্য চিত্রায়িত হচ্ছে টাকা দেয়া- নেয়া। কতো কিস্তিতে টাকা দেয়া হবে, কার টাকা কে দেবে, কে নেবে তার সমাধানের কোনো আলোচনা নেই, আলোচনায় যে পাওনাদাররা নেই। যারা চামড়া জগতে নাটক রচনা, প্রযোজনা, পরিবেশনা ও অভিনয় করেন তাদের নিয়ে আলোচনার সমাধান কোথায়। টাকা দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হলে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে কি?
ট্যানারি মালিকদের অনেক টাকা দেয়া হয়েছে, টাকা কোথায় যায়, টাকা দিয়ে কি করা হয়েছে, চামড়া খাতে টাকা লাগানো হয়েছে নাকি টাকা দিয়ে জমির ব্যবসায়ী হয়েছে দেখার কি কেউ আছে? ট্যানারি স্থানান্তরের টাকা দেয়া হয়েছে, শিল্প ঋণ দেয়া হয়েছে, চামড়া কেনার জন্য টাকা দেয়া হয়েছে, ৪০-৫০ বছর ব্যবসা চলছে, কাঁচা চামড়ার বেপারীদের এতিমখানার, মাদ্রাসার বকেয়া টাকা আছে। এক টাকাও ট্যানারি শিল্পকে লক্ষ্য অর্জন করাতে সক্ষম হলো না, তদারকি করেন কারা, টাকা যায় কোথায়? এখন ট্যানারির মালিকদের টাকা দেবে কারা, কোত্থেকে টাকা আসবে? যে টাকার জন্য অজুহাত তৈরি করে কোরবানির চামড়া পচানো হলো, এখন তিন কিস্তির মাধ্যমে পোস্তার আড়তদারদের মাধ্যমে টাকা দেয়ার অঙ্গীকার হচ্ছে। এই টাকা যদি প্রকৃত পাওনাদারদের হাতে না পৌঁছানো হয় তবে চামড়ার বাজার কি নিয়ন্ত্রণহীন হবে? হিন্দি ছবির একটি ডায়ালগ আছে, একি থালিকি চাট্টিবাট্টি সব হয়। চামড়া নিয়ে আলোচনায় টাকা দেয়া-নেয়া একি থালিকি চাট্টিবাট্টি নয় কি?
টাকা দেয়া নেয়ার সভা করে দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোরবানির চামড়া পচানোর অপরাধীদের আড়াল করছেন না তো? ক্ষতি আমাদের যা হওয়ার হয়ে গেছে। ক্ষতি আর কি হবে। এখন ট্যানারি মালিকদের জবাবদিহিতায় আনতে হবে। ভালো রপ্তানিমুখী শিল্প মালিকদের পুরস্কার এবং রপ্তানির জন্য যা কিছু করার দরকার সরকার তাই করবে। মন্দ শিল্প মালিকরা রপ্তানির নামে টাকা নিয়ে কি ব্যবসা করছে, কোথায় কোথায় টাকা রাখা হয়েছে, কোথায় টাকা পাচার করেছে, খুঁজে বের করতে হবে। দুষ্ট গরুর চাইতে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো। মাত্র বিশটি সক্ষম ট্যানারি রপ্তানিমুখী হলে বাংলাদেশের কাঁচা চামড়ার সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। লেখক : মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
আপনার মতামত লিখুন :