আমিন মুনশি : গিরগিটি নয়, বরং টিকিটিকিই সঠিক। প্রকাশ থাকে যে, ‘আল-ওয়াযাগ’ (اَلْوَزَغُ ) শব্দের উর্দূ অনুবাদ ‘ছিপকলী’ (মিছবাহুল লুগাত, আরবী-উর্দূ অভিধান, পৃ: ৯৪৩); (আল-মুনজিদ, আরবী-উর্দূ, পৃ: ১০৮২)। যার বাংলা অর্থ টিকটিকি (ফরহঙ্গ-ই-রববানী; পৃ: ২৬০; ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ, উর্দূ-বাংলা অভিধান, পৃ: ৩৫৬)। আর ‘আল-হিরবাউ’ (اَلْحِرْبَاءُ )-এর উর্দূ অর্থ গিরগিট্ (মিছবাহুল লুগাত পৃ: ১৪৪; আল-মুনজিদ পৃ: ১৯৮)। যার বাংলা গিরগিটি বা কাকলাস ব্যবহৃত হয় (ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ, পৃ: ৬৯১; ফ‘রহঙ্গ-ই-রববানী, পৃ: ৫০৭-৮)।
গিরগিটি মুহূর্তের মধ্যে গায়ের রং পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু টিকটিকি তা পারে না। ফলে গিরগিটির গায়ের পরিবর্তিত রং দেখেই আমাদের দেশের লোকজন মারতে বেশী উদ্যত হয়। (বিস্তারিত দেখুন : আল-ক্বামূস; আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব পৃ: ১০২৯; আরবী-বাংলা অভিধান (ঢাকা : বাংলা একাডেমী), ৩/২৫৫৪ পৃ:)। উল্লেখ্য, ভারতের কতিপয় লেখক স্ব স্ব লেখনীতে এবং এ দেশের বাংলা অনুবাদ মিশকাতে ও ‘আল-কাওছার’ আরবী-বাংলা অভিধানে ‘আল-ওয়াযাগ’ অর্থ গিরগিটি লেখা হয়েছে, যা শুদ্ধ নয়।
টিকটিকির লেজে মাদকতা আছে। ইবনুল মালেক বলেন, এটি একটি কষ্টদানকারী ও বিষাক্ত প্রাণী। শয়তান একে ইবরাহীমের অগ্নিকুণ্ডে ফুঁক দেওয়া ছাড়াও অন্যান্য পাপের কাজে ব্যবহার করে থাকে (মিরক্বাত হা/৪১১৯-এর ব্যাখ্যা)। হযরত আয়েশা (রা:) তার পাশে একটি বর্শা রাখতেন। যা দিয়ে টিকটিকি মারতেন।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছা:) আমাদের খবর দিয়েছেন, ইবরাহীম (আ:)-কে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয় তখন পৃথিবীর সকল প্রাণী তা নিভানোর চেষ্টা করেছিল কেবল এই টিকটিকি ব্যতীত। সে তাতে ফুঁক দিয়েছিল, যাতে আগুন আরও বেশি জ্বলে ওঠে। সে কারণে তিনি এদের মারতে বলেছেন’ (ইবনু মাজাহ হা/৩২৩১; ছহীহাহ হা/১৫৮১)। উম্মে শারীক (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছা:) টিকটিকি মারতে বলেছেন।
তিনি আরো বলেন, টিকটিকি ইবরাহীম (আ:)-এর বিরুদ্ধে আগুনে ফুঁক দিয়েছিল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪১১৯)। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারে টিকটিকি মারতে পারলে ১০০ নেকী, দ্বিতীয়বারে তার চেয়ে কম, তৃতীয় বারে তার চেয়ে কম নেকী পাবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪১২১)।