আক্তারুজ্জামান : ঈদ আনন্দের ভিড়ে ক্রিকেট উত্তেজনা একটু ফিকে হয়ে এসেছিলো। কিন্তু অ্যাশেজের ম্যাচ মাঠে গড়ালে সবকিছুই ছেড়ে যে ক্রিকেটে আসতে হবে সেটা আবারও বোঝা গেলো। কেননা লর্ডস টেস্ট শুরুর দিনই ক্রিকনইফো ও ক্রিকবাজের ট্রেন্ডে চলে এসেছে অ্যাশেজ। লর্ডসে আজ অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ এজবাস্টনে জিতে ইতিমধ্যে এগিয়ে আছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। লর্ডসে নিজেদের পারফরম্যান্স ধরে রেথে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নই দেখছেন তারা। অন্যদিকে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের এখন একটাই লক্ষ্য। অজি ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথকে বিনা রানেই ফেরানো। কেননা তার রানের কাছেই প্রথম টেস্টে হেরেছে তারা। এই টেস্ট জিতে সিরিজে ফিরতে স্মিথকে ফেরানোর কোনো বিকল্প নেই তাদের কাছে।
লর্ডস টেস্ট সামনে রেখে ইংলিশদের যথারীতি একটাই প্রশ্ন- স্টিভ স্মিথকে আউট করা যাবে কীভাবে? এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়ার দুই ইনিংসেই আউট হয়েছেন স্মিথ। তবে তার আগে জোড়া সেঞ্চুরিতে চূড়ান্ত সর্বনাশ করে ছেড়েছেন স্বাগতিকদের। জো রুটের দলকে খুব বেশি দোষারোপের সুযোগ নেই। এজবাস্টনে স্মিথকে দ্রæত আউট করার সব রকম চেষ্টাই করেছে তারা। কিন্তু ব্যাট চওড়া হয়ে উঠলে কী আর করা!
স্মিথের ব্যাটিং দেখে তেমন মনে হওয়াই স্বাভাবিক। আর টেস্টে ইংল্যান্ডকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেলে সত্যিই চওড়া হয়ে ওঠে স্মিথের ব্যাট। দলটির বিপক্ষে শেষ ১০ ইনিংসে তার ব্যাটিং গড় ১৩৯.৫! আর এজবাস্টনে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাওয়ার পর স্মিথ নিজেই বলেছেন, ‘আমি টেস্ট ভালোবাসি, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে ভালোবাসি। অ্যাশেজ খেলার জন্য এটা দারুণ জায়গা আর শেষ চার দিনের সকালকে মনে হয়েছে বড়দিনের সকাল।’
স্মিথের এ মন্তব্যে খেপছেন জিওফ্রে বয়কট। চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী দল প্রতিপক্ষের মাঠে অ্যাশেজ খেলতে এসে এতটা স্বস্তিতে থাকবে যে বড়দিন বলে মনে হবে! টেলিগ্রাফে লেখা কলামে তাই রুটের দলের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাবেক ইংলিশ ওপেনার। স্মিথকে আউট করার উপায়ও বাতলে দিয়েছেন বয়কট, ‘(স্মিথের) এ ধরনের মন্তব্য ইংল্যান্ড খেলোয়াড়দের জন্য লজ্জাজনক। তাদের খারাপ লাগা উচিত। অন সাইডে বেশি ফিল্ডার রেখে স্টাম্পে বল করা যায় না? সে ব্যাটে খেলতে না পারলে লেগ বিফোর কিংবা বোল্ড হবে। আমাদের সিমাররা বাঁহাতিদের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক হলেও স্মিথের বিপক্ষে তা নয়।’
স্টুয়ার্ট ব্রড-ক্রিস ওকসরা যে একেবারে আক্রমণাত্মক ছিলেন না তা ভেবে নেওয়াও ভুল। এজবাস্টনে স্মিথ এমন ব্যাটিং (১৪৪, ১৪২) করেছেন যে তার সঙ্গে তখন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের তুলনাও উঠেছে! পরিসংখ্যানও মিথ্যে বলছে না। ক্রিকেটের সবচেয়ে আইকনিক সংখ্যাটা হলো ৯৯.৯৪। যা ডন ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড়। টেস্টে ন্যূনতম ২০ ইনিংস ব্যাট করেছেন, এ হিসেবে ডনের পরই স্মিথের ব্যাটিং গড় ৬২.৯৬। ১৯৪৮ সালে ব্র্যাডম্যান শেষ টেস্ট খেলার আগে এবং অবশ্যই পরের ৭১ বছরে কোনো ব্যাটসম্যানই স্মিথের মতো ৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড়ে এত কাছে যেতে পারেনি। সম্পাদনা : রাশিদুল
আপনার মতামত লিখুন :