আনিস তপন : নদী সংক্রান্ত ‘টাস্কফোর্স’ এর প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার। নদী তীরে ৪০ কিলোমিটার কি-ওয়ালসহ অবকাঠামো নির্মাণ শুরুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এ সভায়। একই সঙ্গে চলমান উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রমকে অভিনন্দন জানিয়ে তা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় আরো জানানো হয়, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা য়টি পন্টুন, ৪০ কিলোমিটার কি-ওয়াল, ১৯টি আরসিসি জেটি, ৪০ টি স্পার্ড ও ৪০৯টি বসার বেঞ্চ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে যা ২০২২ সনের মধ্যে সম্পন্ন হবে । এবছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৫,২৩৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে ঢাকার চারপাশে নদীর তীরভূমির প্রায় ১৪৫.১ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে ।এসময় নিলামের মাধ্যমে ৮,৬৪,৩৮,৪০০ টাকা এবং জরিমানার মাধ্যমে ২৭,০৬,০০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর নাব্যতা এবং নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে পরামর্শ প্রদান, সুপারিশ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য গঠিত ‘টাস্কফোর্স’ এর প্রথম সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও টাস্কফোর্স এর সভাপতি খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সভায় জানানো হয় যে, নদীর তীরের সীমানা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ৯,৫৭৭ টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩,৮৫৫ টি পিলার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত ২,১১৪ টি পিলারের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। সভায় আরো জানানো হয় যে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৬১২.২২ একর জমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩৭৮.৬২ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ২৩৩.৬০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১৫,৫৯২ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১২,৪৭৮ টি এবং নারায়ণগঞ্জে ৩,১১৪টি উচ্ছেদ করা হয়েছে। সারা দেশের অভ্যন্তরীণ নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমানে সাতটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশের নদী খনন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
খাগদোন, বিষখালী, কীর্তনখোলা, যাদুকাটা, রক্তি, রকশোনালা, কর্ণপাড়াখাল, লোহালিয়া, মনু, পিয়ান,আড়িয়াল খাঁ, ইছামতি, তালতলাখাল, পালং, নড়িয়াখাল, পুরাতন দুবালদিয়া, শীতলক্ষ্যা, কালিগঙ্গা, শৈদাহ, গাঘর, মধুমতি, কাচিকাটাখাল, পাড়কোনা, তুরাগ, কুমার,ধলেশ্বরী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, তিতাস নদী, কংস, বাউলাই, সুরমা, মগড়া, পাগলা, বুড়ি, ভোগাই-কংস, নতুনডাকাতিয়া, বাঁকখালী, ভৈরব, আত্রাই, ভোলা, পালরদি, কর্ণতলী, পদ্মা, মেঘনা, গাবখানখাল, কর্ণফুলীনদীচ্যানেল, পশুরনদীচ্যানেল, কাজল-তেতুলিয়া নদীতে খনন কাজ চলমান রয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুস সামাদসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব সচিব ও সংস্থা প্রধানগণসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :