শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১২  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘনের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস ◈ ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ ◈ স্বাস্থ্যখাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী  ◈ কৃষি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন  বছরে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ◈ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১ শতাংশ: এডিবি ◈ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বিজিপির ১৪ সদস্য ◈ ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার তালিকা প্রকাশ করুন: মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০১৯, ০৭:০৩ সকাল
আপডেট : ২৬ জুন, ২০১৯, ০৭:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রানিশংকৈলে মুছে যেতে বসেছে খুনিয়াদিঘি স্মৃতিসৌধ

আনোয়ার হোসেন জীবন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : রানিশংকৈল-কাঁঠালডাঙ্গী সড়কের পাশে রানিশংকৈল উপজেলা পরিষদ হতে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ দিকে অবস্থিত সাদা রং করা প্রাচীর বেষ্টিত একটি স্মৃতিসৌধ যেটি ১৯৭১ সালের নরকীয় হত্যাযজ্ঞের স্বাক্ষর বহন করছে সেটি হলো খুনিয়াদিঘি স্মৃতিসৌধ। এই খুনিয়াদিঘি কি পারবে সেই ৭১ সালের মে মাস হতে শুরু হওয়া ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে খাঁন সেনারা ও তাদের দোসরদের সহযোগিতায় নরকীয় হত্যাযজ্ঞের স্বাক্ষর বহন করতে? এমন অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধাসহ সুধীমহল ও এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তার জন্য এর চারপাশে সীমানা প্রাচীরের ওপর লোহার গ্রিল দেওয়া রয়েছে। কিন্তু  গ্রিলগুলোর অবস্থা একেবারে  নাজেহাল,  প্রাচীর জুড়ে যে কয়েকটি লোহার গ্রিল রয়েছে তাদের মাঝখানের লোহাগুলো নেই। যা নিরাপত্তার অভাবে চুরি হয়ে গেছে। চুরি হওয়ার ফলে এদিকে সৌন্দর্য এমনকি স্মৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে এই স্মৃতিসৌধের।

এ ব্যাপারে যুদ্ধকালীন কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, খুনিয়াদিঘি স্মৃতিসৌধের প্রাচীরের লোহার গ্রিলগুলো নিয়ে যাচ্ছে  মানে একেকজন মুক্তিযোদ্ধার পাঁজর ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি ক্ষোভের সাথে জানান মুক্তিযোদ্ধারের জীবদ্দশায় যদি এরকম দেখি তাহলে  আমরা মারা গেলে মনে হয় এই  স্মৃতিসৌধের চিহ্ন আর থাকবে না । এ বিষয়ে আমি উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বীরমুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা এই খুনিয়াদিঘি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বছরে দুইবার যাই। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এই স্মৃতিসৌধ পাহারা দিতে পারি না। এর রক্ষার দায়িত্ব একমাত্র উপজেলার প্রশাসনের। উপজেলা প্রশাসনের গাফলাতির কারণে এই স্মৃতিসৌধের চিহ্ন মুছে যেতে বসেছে। এই স্মৃতিসৌধের দিকে এখনই উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি দেওয়া উচিৎ বলে তিনি মনে করেন ।

“রানিশংকৈলের মুক্তিযুদ্ধ”নামক বই হতে জানা যায় যে, খানসেনারা স্থানীয় পিস কমিটির তথ্য মোতাবেক এইখানে আনুমানিক প্রায় ৪ হাজার নিরীহ জনগণকে হত্যা করেছে। আশপাশের গ্রামের আওয়ামীলীগ ও স্বাধীনতা পক্ষের লোকজন ও পার্শ্ববর্তী থানা হরিপুরের গ্রাম হতে জনসাধারণকে ধরে এনে সেই খুনিয়াদিঘি পুকুরে গুলি করে ফেলে দেয় এবং কাজের সন্ধানে রাস্তায় চলা লোকদের ধরে এনে হত্যা করে এই পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। সেই সময়ে পাকসেনাদের গুলিতে নিহত হওয়া শহিদদের স্মৃতি রক্ষার্থে খুনিয়াদিঘির পূর্ব পাড়ে নির্মিত হয়েছিল জরাজীর্ণ একটি স্মৃতিসৌধ। যা খুনিয়াদিঘি স্মৃতিসৌধ নামে পরিচিত। খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই পুকুরটির নাম রাখা হয় খুনিয়াদিঘি। এটি উপজেলা চত্বর থেকে এক কিলোমিটার দূরে রানিশংকৈল-কাঁঠালডাঙ্গী প্রধান সড়কের বুক চিরে কালের স্বাক্ষী হয়ে বেহাল অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবে গ্রিলের লোহাগুলো চুরির ঘটনা ঘটছে। ঠিক যেন মনে হচ্ছে আস্তে আস্তে এই স্মৃতিসৌধের স্মৃতি মুছে যেতে চলেছে। এই স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য রক্ষা করা এখনই দরকার ।

এই স্মৃতিসৌধ রক্ষার ব্যাপারে  উপজেলা  নির্বাহী  কর্মকর্তা  মৌসুমী  আফরিদা বলেন, আমি ব্যাপারটি দেখতেছি। সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়