শামীম রেজা ,বাগমারা প্রতিনিধি : তখন সময় বিকেল পৌনে ৫টার মতো। সারাদিন প্রচণ্ড গরম আর তাপমাত্রাও ছিলো অনেক। হঠাৎ করেই পুব আকাশ ঢেকে গেল মেঘে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ধূলার মতো ঝড় এসে চোখের সামনেই সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিল।
অন্যদিনের মতো আকাশে মেঘ ধরলেও এ রকম ঝড় দেখা যায় না। কিছু বুঝে উঠার আগেই মাত্র দুই-তিন মিনিটের মধ্যেই হয়ে গেল শত শত মানুষের ক্ষতি।
ঝড়ের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি, পানবরজ, পাটক্ষেত, গাছপালা ভেঙে তচনছ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনের উপর গাছ উপড়ে ভেঙে পড়লে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়। উপজেলার শ্রীপুর এবং গনিপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে বয়ে যায় এই ঝড়টি। এর ফলে দুটি ইউনিয়নে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি সংঘটিত হয়েছে।
সরেজমিনে শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর, গোয়ালকান্দা, সাদোপাড়া, চাঁইপাড়া এবং গনিপুর ইউনিয়নের বাগমারা, একডালা গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ঘরবাড়ির চালা উড়িয়ে ফেলেছে। বাগমারার কৃষকের দ্বিতীয় অর্থকারী ফসল পান বরজ মাটিতে শুয়ে ফেলেছে, পাট ক্ষেত, ভুট্টা, বাঁশ, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পালা ভেঙ্গে এবং উপড়িয়ে ফেলেছে।
শ্রীপুর ইউনিয়নের সাদোপাড়া গ্রামের মহিদুল ইসলাম এবং আক্কাস আলীর বাড়ির চালা উড়ে গেছে।এছাড়াও চাঁইপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম, হোসেন আলী, সাহেব আলীর বাড়ির চালাও তুলে ফেলেছে। তাছাড়া কবীর, বাক্কার, বাবুল, ইব্রাহীম, ফয়েজ সহ শতাধিক কৃষকের পান বরজ ভেঙে পড়েছে।
এদিকে গনিপুর ইউনিয়নের বাগমারা হাটের কয়েকটি দোকান উল্টে গেছে সেই সাথে একডালা এবং বাগমারা গ্রামের বেশকিছু কৃষকের বাড়িঘর, পান বরজ এবং গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে রাস্তার ধারে থাকা একটি শতবর্ষী পাইকড় গাছ রাস্তায় উপড়ে পড়লে যোগযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। সকাল থেকেই স্থানীয়রা গাছটি কাটার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন বাগমারা বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন।
এ ব্যাপারে বাগমারা জোনাল অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক রেজাউল করিম বলেন, হঠাৎ ঝড় এসে গাছপালা ভেঙে এবং উপড়ে লাইনের উপর পড়ায় উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড় থেমে যাওয়ার পর থেকেই লাইন পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত রয়েছে লাইনম্যানরা। যে সকল এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে লাইন পরিষ্কার হলে সেখানে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি শ্রীপুর এবং গনিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :