শিরোনাম
◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে? ◈ এবার থাইল্যান্ড থেকে ভারতগামী বিমানে ১৬ টি সাপ, এরপর যা ঘটল ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে এবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্তা

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৮:০৭ সকাল
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৮:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছেলের খোঁজে ৩০ বছর পথে পথে ঘুরছেন স্কুলশিক্ষক পিতা

এইচ এম জামাল: একদিন না একদিন ছেলেকে খুঁজে পাবেন এই আশায় ৩০ বছর পথে পথে ঘুরছেন ৯০ বছর বয়সী পিতা। পরীক্ষায় ফেল করার পর নিরুদ্দেশ হয়েছে ছেলে। প্রাণপ্রিয় সেই ছেলের খোঁজে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ পরিচিত সবার বাড়িতে পাগলের মত খোঁজ নিয়েছেন স্কুলশিক্ষক বাবা। কিন্তু ছেলের সন্ধান পাননি। পুলিশের কাছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। অবশেষে ছেলের খোঁজে রাস্তায় নামেন প্রাইমারি স্কুলের ওই শিক্ষক। এরপর গত ত্রিশ বছর ধরে পথে পথে পার করেছেন সন্তোষ কুমার মাইতি। ৯০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধের আশা, একদিন তিনি ছেলেকে খুঁজে পাবেনই। বাংলাদেশ জার্নাল

চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছে তার। কানেও ভালো শুনতে পান না। নড়বড়ে দেহখানি লাঠিতে ভর করে তিনি ঘুরে বেড়ান। মৃত্যুর আগে অন্তত একবার ছেলের মুখ দেখতে চান এই বৃদ্ধ। তাইতো এই বয়সে এতোটা কষ্ট করে চলেছেন। সন্তোষ কুমার মাইতির বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ভুপতিনগর থানার বায়েন্দা গ্রামে। সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলের নাম কৃষ্ণানন্দ আর ছোট ছেলের নাম দয়ানন্দ। সুভাষপলি­ হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলো ছোট ছেলে দয়ানন্দ। ত্রিশ বছর আগের কথা।

১৯৮৯ সালের ২ জানুয়ারি স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলে দেখা যায় দয়ানন্দ ফেল করেছে। এরপর স্কুল থেকে আর বাড়ি ফেরেনি সতেরো বছরের দয়ানন্দ। দুই সপ্তাহ ধরে আত্মী-স্বজন পরিচিতদের বাড়ি বাড়ি ছেলেকে খুঁজে ফেরেন ৬০ বছরের মধ্যবয়সী বাবা সন্তোষ কুমার মাইতি। এরপর ২০ জানুয়ারি ছেলে নিখোঁজের ঘটনা জানিয়ে ভূপতিনগর থানায় ডায়েরি করেন প্রাথমিক শিক্ষক সন্তোষবাবু। এর চার বছর পর অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন তিনি। এরপর ছেলের খোঁজে নেমে আসেন রাস্তায়।

সেই থেকে খুঁজেই চলেছেন। তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘ ছেলের খোঁজে কতবার যে পুলিশের কাছে গেছি! কিন্তু তারা কোনো সাহায্যই করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বড় ছেলেকে নিয়ে তার সঙ্গেও দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেখা হয়নি। বিষয়টি তার নজরে আনার জন্য ছেলের নিখোঁজ সংক্রান্ত কাগজপত্র মুখ্যমন্ত্রীর স্থানীয় দফতরে জমা দিয়েছেন। কলকাতায় ভবানীভবনেও বহুবার ছেলর খোঁজে এসেছেন। সিআইডির কথামত ২০০৬ সালের ২৭ এপ্রিল ভবানীভবনে নতুন করে অভিযোগও দায়ের করেছেন।

লালবাজার থানাতেও ধর্না দিয়েছেন। কিন্তু ছেলের কোনো খোঁজ পাননি। শুধু কি থানা, আদালত চত্বরেও কত বছর ধরে ঘুরছেনে এই বৃদ্ধ! আদালতের এখানে সেখানে বসে ছেলের জন্য চোখের জলফেলেন। কিন্তু কে দেবে তাকে ছেলের খোঁজ! বড় ছেলে কৃষ্ণানন্দ মাইতি বলেন, ‘ভাই নিখোঁজ হওয়ার বছর দুয়েক পর প্রতিবেশীদের কয়েকজন জানিয়েছিলেন কলকাতার শিয়ালদহ, ধর্মতলা ও বৌবাজার এলাকায় তারা ভাইকে দেখেছেন। কিন্তু আজও ভাইযয়র খোঁজ পাইনি।’ তবে মাইতি পরিবারের লোকজন জানান, কয়েক বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দফতর থেকে একটি চিঠি এসেছিল। তাতে জানানো হয়েছিল, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই এখনো সেই চিঠির ভরসায় ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় দিন গুনছেন সন্তোষ বাবু।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়