শিরোনাম
◈ বিভিন্ন চাপে নির্বাচন কমিশন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় ◈ তুরস্কের ১৫২ রেফারি জুয়ার সঙ্গে জড়িত  ◈ ২০২৬ সা‌লের  বিশ্বকাপে খেলবেন লিও‌নেল মেসি! ◈ একসময় জাতির গর্ব, এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু: রাজনীতির খেলায় নিজের ক্যারিয়ার শেষ করলেন সাকিব আল হাসান ◈ যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় হামলা, নিহত অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি ◈ অনুমতি ছাড়াই সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষমতা পাচ্ছে দুদক ◈ ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ৬ জনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন, দুজনের মৃত্যু ◈ ভেস্তে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে যুদ্ধবিরতি: গাজায় ‘শক্তিশালী’ হামলা চালানোর নির্দেশ নেতানিয়াহুর ◈ সোনার দাম একলাফে কমলো সাড়ে ১০ হাজার টাকা ◈ ইতালিতে রেসিডেন্স পারমিট পাওয়ায় শীর্ষ তিনে বাংলাদেশিরা

প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৯:১১ সকাল
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৯:১১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভোটার অগ্রাধিকারের চতুর্থ স্থানে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’

সমকাল : জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বেশিরভাগ ভোটারই মনে করেন, নির্বাচনী ইশতেহারে কর্মসংস্থানের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামোকে দ্বিতীয় এবং শিক্ষা খাতের উন্নয়নকে তৃতীয় অবস্থানে রেখেছেন তারা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি রয়েছে অগ্রাধিকার তালিকার চতুর্থ স্থানে। মাত্র ১৭.৭ শতাংশ ভোটার সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানকে তাদের অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে রেখেছেন।

বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের নির্বাচনপূর্ব জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার 'একাদশ জাতীয় নির্বাচন : নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা' শীর্ষক এ প্রতিবেদনটি  কাছে এসেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ৬৪টি জেলার পাঁচ হাজার ৩৭৮ জন ভোটারের কাছ থেকে এ জরিপের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৬৮.৬ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন দলের নির্বাচনী ইশতেহার সম্পর্কে জানলেও এবং ৮২.৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করলেও এটি পড়ে দেখেছেন মাত্র ২৫ শতাংশ। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৪৯ দশমিক এক শতাংশ ভোটার প্রার্থীর  যোগ্যতা দেখে ভোট দেওয়ার কথা জানান; রাজনৈতিক দল দেখে ভোট দেওয়ার কথা বলেন ৩০ দশমিক ছয় শতাংশ। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের প্রত্যাশা বিবেচনায় রেখে ভোট দেন অংশগ্রহণকারীদের ৬৯ শতাংশ; স্থানীয় সমস্যা সমাধানের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ভোট দেন ২৫ শতাংশ। একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বেকারত্ব সমস্যার সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন ২৭.৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। এ ছাড়া পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়নকে ২৬.৩ শতাংশ, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নকে ২৩.৮ শতাংশ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনকে ১৭.৭ শতাংশ এবং নেশা ও মাদক নিয়ন্ত্রণকে ১২.৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী গুরুত্ব দিচ্ছেন।

যেভাবে জরিপ :  প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপের জন্য ঢাকা, রাজশাহী, বরিশাল এবং সিলেট বিভাগের প্রতিটি থেকে ৬০০ জন করে এবং খুলনা বিভাগে ৬০১, রংপুর বিভাগে ৫৭৫ ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৫৯৯ জন ভোটারের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এ ছাড়া কক্সবাজার জেলার আটটি উপজেলার ৬০০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় পৃথকভাবে। ব্র্যাকের কর্মীরা প্রত্যেকের মুখোমুখি হয়ে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি বেছে নেন।

জরিপের জন্য শহর এলাকার দুই হাজার ৩৮৪ জন এবং গ্রামাঞ্চলের দুই হাজার ৯৯৪ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এদের মধ্যে পুরুষ দুই হাজার ৮৭৮ জন এবং নারী দুই হাজার ৫০০ জন। বয়সের হিসাবে এদের মধ্যে ১৮-২৩ বছর বয়সী ছিলেন ৬০৪ জন, ২৪-৩৫ বছরের মধ্যে ছিলেন দুই হাজার ২৮৭ জন, ৩৬-৬০ বছরের মধ্যে ছিলেন দুই হাজার ২২৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ছিলেন ২২১ জন।

এ ছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কোনোরকম আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত নন এমন ব্যক্তি ছিলেন ৬১৫ জন। এ ছাড়াও ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত এক হাজার ১২১ জন, মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষিত দুই হাজার ৯৪৩ জন এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ৬৯৯ জন। পেশাগত দিক থেকে ছিলেন ৫২৮ জন কৃষক, ৮৬৯ জন চাকরিজীবী, এক হাজার ১১৮ জন ব্যবসায়ী, ৬০৭ জন শ্রমিক, এক হাজার ৭৮২ জন হোমমেকার, ২৯ জন শিক্ষার্থী, ৪৩৬ জন বেকার এবং অন্যান্য পর্যায়ের নয়জন।

জরিপের ফল :  জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, জনপ্রত্যাশার তালিকায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি রয়েছে চতুর্থ স্থানে। মাত্র ১৭.৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চান। অন্যদিকে, কৃষি উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন মাত্র চার শতাংশ ভোটার। রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু সমস্যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগজনক বিষয় হলেও মাত্র ৪.৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। অবশ্য কক্সবাজারের অংশগ্রহণকারীরা অগ্রাধিকারের শীর্ষে রেখেছেন অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টিকে (৩৮ দশমিক পাঁচ শতাংশ, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানকে গুরুত্ব দিয়েছেন ১৫ শতাংশ ভোটার।

জরিপে দেখা গেছে, নির্বাচনী ইশতেহার পড়েছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষ ৭৩ দশমিক ছয় শতাংশ এবং নারী ৬২ দশমিক নয় শতাংশ। বিভাগওয়ারি হিসাবে দেখা গেছে, রাজনৈতিক ইশতেহারের কথা সবচেয়ে বেশি জানেন বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের ভোটাররা (৮১ দশমিক আট শতাংশ ও ৮১ দশমিক ছয় শতাংশ)। আর এ সম্পর্কে সবচেয়ে কম শুনেছেন ঢাকা বিভাগের মানুষ। নির্বাচনী ইশতেহারের কথা জানলেও নির্বাচনী ইশতেহার পড়ে দেখেন মাত্র ২৫ দশমিক এক শতাংশ মানুষ।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মাত্র ছয় দশমিক নয় শতাংশ জানান, তারা ভোট দেন নির্বাচনী ইশতেহার দেখে। জরিপে আরও দেখা যায়, নারী এবং মধ্য বয়সীরা (৩৬ বছর থেকে ৬০ বছর বয়সী) প্রার্থীর যোগ্যতা বেশি বিবেচনা করেন। আর কৃষক এবং ব্যবসায়ীরা বেশি বিবেচনা করেন মার্কা বা দল।

জরিপে ৬৯ দশমিক এক শতাংশ জানান, তারা জাতীয় সমস্যার সমাধানের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২৫ দশমিক এক শতাংশ ভোটার বিবেচনা করেন প্রার্থী স্থানীয় বা আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। স্থানীয় সমস্যাকে শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামের ভোটাররা বেশি গুরুত্ব দেন- যাদের মধ্যে কৃষক-মজুরই বেশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়