তরিকুল ইসলাম সুমন : মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত পেশাজীবি হিসেবে কোনো ব্যাক্তি মানসিক অসুস্থতা সম্পর্কিত বিষয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা সার্টিফিকেট দিলে অনধিক ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে মানসিক স্বাস্থ্য বিল-২০১৮ পাস হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের কয়েকটি বিষয়ে উঠা সংসদ সদস্যদের আপত্তি ও জনমত যাছাইয়ের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনা, মানসিক স্বাস্থ্য রিভিউ ও মনিটরিং কমিটি গঠন, মানসিক অসুস্থ্য ব্যক্তির অধিকার, মানসিক হাসপাতাল স্থাপন, লাইসেন্স, মানসিক হাসপাতাল পরিদর্শন, তল্লাশি ও জব্দ, জরিমানা আরোপের ক্ষমতা, মানসিক রোগীর চিকিৎসায় ভর্তি, স্বেচ্ছায় ভর্তির প্রক্রিয়া, মানসিক রোগীর চিকিৎসার অধিকার, পুনর্বাসন মানসিক অবস্থার বিচারিক অনুসন্ধান, মানসিক রোগীর অভিভাবকত্ব, তার সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইন কার্যকরের ৯০ দিনের মধ্যে যে মানসিক হাসপাতালগুলো আছে সেগুলোকে লাইসেন্স নিতে হবে। এই আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তি পেতে হবে। সরকারের লাইসেন্স নিয়ে বেসরকারিভাবে মানসিক হাসপাতাল স্থাপনের বিধানও রাখা হয়েছে বিলে। এতে অভিভাবক বা ব্যবস্থাপক মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা বা সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা বা আদালতের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদÐ বা তিন বছরের কারাদÐ বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইনটি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক একমাত্র আইন। শত বছরের পুরনো এ আইনটির প্রাসঙ্গিকতা ও সময়োপযোগিতা বা আগেই হ্রাস পেয়েছে। সে প্রেক্ষাপটে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত নাগরিকগণের মর্যাদা সুরক্ষা ও স্বস্থ্য সেবা প্রদান, সম্পত্তির অধিখার, পুনর্বাসন ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণে একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এ পরিপ্রেক্ষিতে শত বছরের পুরনো এ সংক্রান্ত আইনিট রহিতক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা প্রয়োজন ও যুক্তিযুক্ত।
আপনার মতামত লিখুন :