মুরাদ হোসেন : “Student life is the best period in a life of a person” এ উক্তির ভিত্তিতে বলা যায় একজন ছাত্র আগামী দিনের একজন সুনাগরিক, একজন দেশ প্রেমিক ও দেশের ভবিষ্যত কর্ণধার। কেননা নিবিড়, নিরলস জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে একজন ছাত্র তার জীবনকে ভবিষ্যতের জন্য তিলে তিলে গড়ে তোলে । দেশের ভবিষ্যত কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হয়ে জাতিকে দেয় সঠিক দিক নির্দেশনা। এ জন্যই একটি আদর্শ সমাজ গঠনে ছাত্রদের ভুমিকা অনস্বীকার্য।
ছাত্র জীবন থেকেই আদর্শ সমাজ বা রাষ্ট্র গঠনে ছাত্র রাজনীতির মূল লক্ষ নির্ধারন করলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারবে।
বিদ্যা অর্জন করা ছাত্র জীবনের অন্যতম কর্তব্য। এছাড়া চরিত্র গঠন, স্বাস্থ রক্ষা, নিয়মানুবর্তিতা, সংযম, সময়নিষ্ঠা, গুরুভক্তি প্রভৃতি শিক্ষাও ছাত্র জীবনের বিশেষ কর্তব্য।ছাত্র জীবনের প্রধান দায়িত্ব নিজেকে, নিজের পরিবারকে, দেশ ও দেশের জনগনকে সুখী সুন্দর করে গড়ে তোলা।
জাতি গঠনের জন্য দেশের মানুষকে নৈতিক শিক্ষার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা অপরিহার্য। আর এ মহৎ দায়িত্ব শুধু ছাত্র সমাজেই পালন করতে পারে। ছাত্র সমাজ বিভিন্ন সংগঠন, সভা-সমিতি বা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে দেশের শিল্প সাংস্কৃতিকে জাগিয়ে তুলতে পারে। দেশের দূরাবস্থা এবং নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্র সমাজের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য
রয়েছে। পল্লী উন্নয়নে ছাত্র সমাজ বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। ছুটি বা অবসর সময়ে তারা অশিক্ষিত কৃষকদেরকে কৃষিজ্ঞান প্রদান, স্বাস্থ ও অধিকার সচেতনতা এবং নৈতিক শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে পল্লী উন্নয়ন করে দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ছাত্র সমাজকে সকল প্রকার সংকীর্ণতা পরিহার করে পারস্পারিক সম্প্রীতি ও ঐক্য বজায় রাখতে হবে।
জাতি গঠনে বা আদর্শ সমাজ বিনির্মানে ছাত্র সমাজের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য হল দেশবাসীকে দেশপ্রেম, স্বার্থত্যাগ ও নৈতিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করা। তারা দেশের সার্বিক অবস্থা ও আদর্শিক সমাজ বিধানের গুরুত্ব সম্পর্কে দেশবাসীকে সম্যক ধারনা দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। সর্বোপরি ছাত্রসমাজকে রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় নীতি বহির্ভূত সকল প্রকার কর্মকান্ড পরিহার করে একটি মাত্র প্লাটফর্মে সমেবেত হতে হবে। ছাত্র সমাজেই কিন্তু দেশবাসিকে পাকিস্তানিদের বৈশম্য মূলক শোসনের অবসান ঘটিয়ে ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অনুপ্রাণিত করে তোলে। বাংলাদেশ স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের পিছনে যে দীর্ঘদিনের সংগ্রাম জড়িত তাতে অনুপ্রেরণা দান করে ছাত্র সমাজ এবং তারাই সব সময় সকল ক্ষেত্রে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেছে। ৫২এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর প্রাদেশিক নির্বাচন,৬৬ এর ছয়দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গনঅভ্যূথান এবং ৭০ এর নির্বাচন ও ৭১ মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র সমাজেই সবার আগে ঝাপিয়ে পরেছে,রক্ত দিয়েছে। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরুধী আন্দোলনেও ছাত্রদের ভূমিকা ছিল প্রধান। তাই দেশ গঠনে ছাত্র সমাজ এক অপরাজেয় শক্তি।
বাংলাদেশ একটি তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ। এদেশের জাতীয় জীবনে উন্নতি, অগ্রগতি এবং নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য তার সূর্যসন্তানদের আজ কঠিন এবং নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। প্রতিটি ছাত্রকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে এবং সম্প্রীতি ও সহনশীলতা চর্চার মাধ্যমে সকল ছাত্রকে একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল আদর্শ সমাজ বিনির্মানে এগিয়ে আসতে হবে।
পরিচিতি:শিক্ষার্থী, সরকারি মাদ্রাসা-ই আলিয়া,ঢাকা/মতামত গ্রহণ:ফাহিম আহমাদ বিজয়/সম্পদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ