ফয়সাল মেহেদী: আসন্ন ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা ও যাত্রীদুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। রাজধানীসহ সারাদেশে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় মনিটরিং কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী সেচ্ছাসেবক ও গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে গত দুইদিন যাবৎ বিভিন্ন বাস টার্মিনাল, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঈদযাত্রা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে ১৮ অগাস্ট, শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের সবকটি জাতীয় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহনের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রাক, মিনি ট্রাক, হিউম্যান হলার, মোটরসাইকেল এমনকি নছিমন-করিমনেও দুরপাল্লায় যাত্রীবহন করতে দেখা যাচ্ছে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন দ্রুতগামী যানবাহনের সাথে পাল্লা দিয়ে চলার কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও যানজট দেখা দিচ্ছে। অনতিবিলম্বে ঈদযাত্রায় ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন অযোগ্য চালক নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে এবারের ঈদেও মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত হবে বলে মনে করেন তিনি।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা না গেলে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী পরিবহনে নিম্ন আয়ের লোকজনের যাতায়াত কোনো ভাবেই ঠেকানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, এবারের ঈদে সারাদেশের সবপথে প্রায় ৫ কোটি যাত্রীর ১৫ কোটি ট্রিপ স্বল্প সময়ে বহনের মত গণপরিবহন ব্যবস্থা অথবা রাস্তা কোনোটির সক্ষমতা আমাদের নেই।
এছাড়াও সারাদেশে ৫ লক্ষাধিক যানবাহন ফিটনেসবিহীন, ১০ লাখ নছিমন-করিমন, ইজিবাইক সড়ক মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। গণপরিবহন সংকটের কারণে ও কম ভাড়ার আশায় নিন্ম আয়ের লোকজন ফিটনেসবিহীন এইসব যানবাহন, পণ্যবাহী যানবাহন, বাস ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। প্রতিবছরের ন্যায় বিআরটিএর মনিটরিং কমিটি মাঠে থাকলেও ঈদযাত্রায় যাত্রী সাধারণের বাস ও লঞ্চের টিকিট দ্বিগুণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণ দামে কিনতে হচ্ছে।
সারাদেশের সড়ক, রেল ও নৌ-পথের যাত্রীসেবা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যবেক্ষণকালে সেচ্ছাসেবকরা ভাংগা ছেড়া সড়ক-মহাসড়ক, দীর্ঘ যানজট, নৌ-পথে অতিরিক্ত যাত্রীবহন, নৌপথে নদীবন্দর ও খেয়াঘাটে নিয়োজিত ইজারাদারদের অতিরিক্ত টোল আদায়ের মহোৎসব, রেলপথের টিকিট কালোবাজারী, সড়ক ও নৌ পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন।
পর্যবেক্ষণকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সমন্ময়ক মো. সায়মন চৌধূরী, স্বেচ্ছাসেবক উপ-কমিটির আহ্বায়ক আজহারুল আলম জিকু, মো. শামসুদ্দীন চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান রাসেল, তৌহিদুল ইসলাম, জিয়াউল হক চৌধুরী, মিলাদ উদ্দিন মুন্না, আজিজুল হক চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহম্মেদ, মো. শাহিন প্রমূখ।
আপনার মতামত লিখুন :