স্পোর্টস ডেস্ক: আদিল রশিদের প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বিতর্ক চলছেই। ভদ্র মানুষ হিসেবে চিহ্নিত, পরিচিত প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুককেও খোঁচা দেওয়া হল। আদিল রশিদের প্রত্যাবর্তন তিনি কী চোখে দেখছেন?
উত্তর অ্যালিস্টার কুক বলেন, আমাদের নির্বাচকদের সামনে তো খুব বেশি অপশন ছিল না। ভারতের বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো বল করার কারণেই আদিলকে সুযোগ দেওয়া হল। এই মুহূর্তে আমাদের সবারই উচিত, ওর প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানানো। ইতিবাচক মানসিকতা দেখাতে হবে সবাইকেই।
অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিতর্কটাকে পাশ কাটিয়ে গেলেন অ্যালিস্টার। আমরা দেখলাম, ইংরেজদের অনুশীলনেও রশিদ অনেকটাই ব্রাত্য হয়ে রয়েছেন। একাকী সময় কাটাতে হল অনেকক্ষণ। গোটা দল একদিকে, আর তিনি মাঠের একপ্রান্তে। অধিনায়ক জো রুটকে আপাতত এই রশিদ-সমস্যা মেটাতে হবে। দলের শান্তি ফেরানোর কারণে।
ভারতীয় দল সম্পর্কে বলতে গিয়ে অ্যালিস্টার জানিয়ে দিলেন, এমনি এমনি তো আর ভারত টেস্ট ক্রিকেটের এক নম্বর দল হয়ে ওঠেনি। বিরাটবাহিনীর তো এমন তিন-চারজন ব্যাটসম্যান আছে, যারা যে কোনও মুহূর্তে খেলার রং বদলে দিতে পারে এবং রয়েছে ভারতের বৈচিত্র্েয ভরা বোলিং অ্যাটাক। এর আগে কখনও দেখিনি ভারতীয় শিবিরে ৫/৬ জন পেস বোলার। এর ফলে যে ছবিটা বেরিয়ে আসে, তাতে রয়েছে যথেষ্ট ভালো এবং ব্যালান্স দলের ছবি।
২০১১ সালে ভারতের বিরুদ্ধে এ মাঠেই অ্যালিস্টার একা ২৯৪ রান করেছিলেন। বার্মিংহামের এই মাঠ তাকে খালি হাতে ফেরায়নি কখনও। আবার সেই মাঠ, আবার বিপক্ষে সেই ভারত। তাই ইংল্যান্ড শিবির তাদের হাজারতম টেস্ট ম্যাচে অ্যালিস্টার কুকের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকবে।
‘মানসিক দিক থেকে, শারীরিক দিক থেকে আমি চমৎকার কন্ডিশনে রয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা, নেটে ব্যাট করছি একেবারে নিজস্ব ভঙ্গিমায়। ব্যাটে বল লাগাচ্ছি নিজের মতো করে। এখানে কত রান পাব, সেটা ভেবে মাথা খারাপ করতে নারাজ।’
খোঁজ করে জানা গেল, ৩৩ বছর বয়স হয়ে গেলেও কুকই এখন ইংল্যান্ড দলের সবথেকে ফিট ক্রিকেটার। ভারতের মতো ইংরেজরাও ফিটনেসের জন্যে ইয়ো-ইয়ো টেস্টে বিশ্বাসী। কুক সেই পরীক্ষায় সবার ওপরে। বাকিরা যখন মাত্র কয়েকটা ল্যাপের পরেই হেদিয়ে গেছেন, কুক সেখানে একটানা ৩ কিলোমিটার দৌঁড়ে থেমেছেন। ভারতের তুলনায় ইংল্যান্ড কিন্তু এই পরীক্ষায় কড়া। ভারতে যে যোগ্যতামান ১৬.১, ইংল্যান্ডে সেখানে ১৯। অর্থাৎ অঙ্কের হিসেবে কুক অনেক ভারতীয়ের থেকেও বেশি ফিট। খুব একটা পিছিয়ে থাকবেন না জেমস অ্যান্ডারসনও।
ইংরেজ প্রচারমাধ্যম এখনও আদিল রশিদে ডুবিয়ে রাখতে চাইছে বিতর্কটাকে। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আবার তারা অ্যালিস্টারের কাছে জানতে চাইল, দীর্ঘদিন টেস্ট ম্যাচ না খেলার অসুবিধাটা কীভাবে অতিক্রম করবেন।
এই প্রশ্নের জবাবটাও দিলেন অ্যালিস্টার সতর্কভাবে, এই অসুবিধাটা থাকবে রশিদের। হয়তো খানিকটা নার্ভাসও থাকবে ও। তবে, আগের তুলনায় এখন ও অনেক ম্যাচিওর্ড। সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই মানিয়ে নিতে পারবে।
অনেকদিন পর অ্যালিস্টারকে পেয়ে ইংরেজ প্রচারমাধ্যম খোঁচাল আরও একবার। নেতৃত্ব ছাড়ার পর এখন কেমন লাগছে? বছর দুয়েক আগে ক্যাপ্টেন্সি ছেড়ে দিয়েছেন। তাহলে এখন এমন প্রশ্ন কেন?
এই প্রশ্নের উত্তরও দিলেন অ্যালিস্টার, ঠান্ডা মাথায়, এখন তো আর আমি ক্যাপ্টেন নই। নেতৃত্ব হারিয়েছি দুই মৌশুম আগে। নিজের ব্যাটিং নিয়ে মেতে আছি। উপভোগ করছি প্রতিটি মুহূর্ত। এখন তো আর ঘনঘন টিম মিটিংয়ে যেতে হয় না। নেতৃত্ব উপভোগ করছিলাম ভালই। এখন যেমন উপভোগ করছি শুধুই ব্যাটিং।
অ্যালিস্টার মনে করেন, ইংল্যান্ডের আবহাওয়া, উইকেট এবং ডিউক বলের সামনে অন্য চ্যালেঞ্জ থাকে অতিথি দলের। আমরা এ সবে অভ্যস্ত। তাই আমাদেরকে হারানোর জন্য সত্যিই কঠিন পরিশ্রম করতে হয় সব বিদেশি দলকে এখানে।